দেশজুড়ে

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ইমার্জেন্সি লেন

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ চার লেনের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ১০ লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এই ১০ লেনের মধ্যে থাকছে দুটি ইমার্জেন্সি লেন। এগুলো দিয়ে চলবে অ্যাম্বুলেন্স, ভিআইপি ও নিরাপত্তাবাহিনীর গাড়ি। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ইমার্জেন্সি লেন হচ্ছে দেশের কোনো মহাসড়কে।

এর আগে ঢাকা-জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ চার লেন মহাসড়ককে ১০ লেনের এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করার জন্য একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে কোরিয়ান কোম্পানি।

সম্প্রতি ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কটি ১০ লেনবিশিষ্ট আধুনিক এক্সপ্রেসওয়েতে রূপান্তর একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। ‘ইমপ্রুভমেন্ট ঢাকা জয়দেবপুর ময়মনসিংহ রোড ইনটু এক্সপ্রেসওয়ে উইথ সার্ভিস লেন বোথ সাইড’ শীর্ষক প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান কোরিয়া ওভারসিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। সে সময় অর্থমন্ত্রী জানান, কাজটির জন্য প্রাথমিকভাবে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। এ টাকা পুরোটাই কোরিয়ান কোম্পানি দেবে। সরকারকে এ ক্ষেত্রে টাকা দিতে হবে না। কারণ এখন যে চার লেন মহাসড়ক রয়েছে, সেটি সরকার নিজে করেছে। এ কাজের জন্য যে পুনর্বাসন করতে হবে, তার জন্য ২৮০ কোটি টাকা আর ইউটিলিটি স্থানান্তরের জন্য ১০০ কোটি টাকা সরকার বহন করবে। বাকি তিন হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা কোরিয়ান কোম্পানিটি বহন করবে। জানা গেছে, জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত মহাসড়কটি দুই লেন থেকে চারলেনে উন্নীত করা হয় ২০১৬ সালে। চারলেনে উন্নীত করার চার বছরের মাথায় মহাসড়কটি আরো স¤প্রসারণের উদ্যোগ নেয় সরকার। চার লেনকে ১০ লেনে উন্নীত করার মাধ্যমে দেশের সবচেয়ে বেশি লেনবিশিষ্ট মহাসড়ক হতে যাচ্ছে এটি। এর আগে যাত্রাবাড়ী থেকে শিমরাইল পর্যন্ত মহাসড়ককে ৮ লেনে উন্নীত করা হয়েছিল।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এখনকার চার লেনের পাশাপাশি ১০ ফুট প্রশস্ত করে দুই পাশে ব্যারিয়ার দিয়ে ইমার্জেন্সি লেন নির্মাণ করা হবে, যা দিয়ে শুধু অ্যাম্বুলেন্স, নিরাপত্তা গাড়ি, ভিআইপিসহ যেকোনো জরুরি কাজে নিয়োজিত গাড়ি চলাচল করবে। এরপর আরও ১৮ থেকে ২৪ ফুট করে স্বল্প গতির যান চলাচলের জন্য আলাদা দু’টি করে লেন করা হবে দুই পাশে। সব মিলিয়ে একপাশে পাঁচটি সড়ক লেনসহ দু’পাশে ১০ লেনের সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। দু’পাশের অন্য সড়ক থেকে এক্সপ্রেসওয়ে সড়কে উঠতে ও বের হতে প্রতি ২-৩ কিলোমিটার পর পর আন্ডারপাস ইউটার্ন নির্মাণ করা হবে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অধীনে বর্তমানে সারা দেশে ২২ হাজার কিলোমিটারের বেশি মহাসড়ক রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় চার হাজার কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৪ হাজার ৮৮২ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক ও প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক। এসব সড়কের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দুটি চারলেনে উন্নীত করা হয়েছে।

২০১১ সালের শেষ জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়। নির্মাণ শেষে মহাসড়কটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় ২০১৬ সালের মাঝামাঝি। কম-বেশি ৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত করতে ব্যয় হয় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। চারলেনে উন্নীত হলেও প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় মহাসড়কটি বিভিন্ন স্থানে নষ্ট হতে শুরু করেছে।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close