আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদস্বাস্থ্য

মাইগ্রেশনের দাবীতে আশুলিয়ায় মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতারণা করে আশুলিয়ার নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছে কলেজটির ভুক্তভোগী ৪৫ শিক্ষার্থী। শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে আব্দুল্লাহপুর-ইপিজেড মহাসড়ক আশুলিয়ার সরকার মার্কেট এলাকায় প্রায় ১ ঘন্টা অবরোধ করে রাখে তারা।

এসময় সড়কটির উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সড়িয়ে দিলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যান।

শিক্ষার্থী ইয়াহিয়া শুভ বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ও আদালতের স্থগিতাদেশের কাগজ দেখিয়ে ভর্তি করায়। বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নেই, আশ্বাস দিয়েও কিন্তু এখনও রেজিস্ট্রেশন এনে দিতে পারেনি। কলেজের শিক্ষাব্যবস্থা সংক্রান্ত সব সুযোগ-সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পড়ালেখা থেকে পিছিয়ে পড়ছি এবং চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষার পর কীভাবে ইন্টার্নশিপ করব, তা জানিনা। আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমরা অন্য মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশনের আবেদন করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা কর্তৃপক্ষকে বলেছি যেন তারা রিট বাতিল করে। কিন্তু তারা আমাদের কথা মানছেন না।

এই মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রথম নয়, এর আগেও বিএমডিসির অনুমোদন নেই ও নানা অনিয়মের অভিযোগ ২০১৬ সালে প্রায় ৩৬৫ শিক্ষার্থী মাইগ্রেশন করে অন্য মেডিকেল কলেজে গিয়ে রক্ষা পায়। নিয়ম অনুসারে তখন এই মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে আদালতের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞার উপর স্থগিতাদেশ নেয় মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আবারো শিক্ষার্থী ভর্তি করার ফাঁদ পাতে কলেজটি। ২০১৮ সালে এই ফাঁদে পড়ে ৪৫ শিক্ষার্থী এই মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। পরে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দিলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

এদিকে পরীক্ষার সুযোগ ও বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন মিলছে না শিক্ষার্থীদের। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরাই মাইগ্রেশনের রিট আবেদন করে আদালতে। পরে ২৮ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তাদের মাইগ্রেশন করার নির্দেশনা দেয় আদালত। তবে মাইগ্রেশন বাস্তবায়ন করতে হলে এই মেডিকেল কলেজকে স্টে অর্ডারের আবেদন বাতিল করতে হবে মর্মে আদালতে আপিল আবেদন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

শিক্ষার্থী ইমরান ইমন বলেন, অবস্থা বেগতিক দেখে আমরা মাইগ্রেশনের আবেদন করি। কিন্তু আমাদের মাইগ্রেশনের অনুমোদন দেয়া হয়নি। পরে আমরা আদালতে রিট করলে মাইগ্রেশন বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয় আদালত। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই রায়ের বিরুদ্ধে আবারও আপিল করা হয়। আমরা ডিজি হেলথের সাথে যোগাযোগ করেছি, তারা বলেছেন মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ যদি শিক্ষার্থী ভর্তির নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে স্টে অর্ডার এর আবেদন তুলে নেয় তাহলে মাইগ্রেশন করা যাবে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের অন্য মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেট করতে চাইলে এই মেডিকেল কলেজটি তাদের স্টে অর্ডারের আবেদন খারিজ করতে হবে। তবেই তাদের মাইগ্রেশন করা সম্ভব হবে। স্টে অর্ডার খারিজ হলে নিয়ম অনুসারে পরে আমরা এই কলেজটি বন্ধ ঘোষণা করবো।

নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. রুহুল কুদ্দুস রুমি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যাতে বিষয়টি সমাধান করে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা যায়।

এর আগে গত বুধবার (১৬ নভেম্বর) কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে কলেজটির অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল শিক্ষার্থীরা।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close