আমদানি-রপ্তানীশিল্প-বানিজ্য

১১ দিন ধরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়ায় টানা ১১ দিন ধরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। ফলে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় বিভিন্ন বেসরকারি পার্কিং আর সড়কে বেশ কিছু পেঁয়াজবোঝাই ট্রাক এখনও দাঁড়িয়ে আছে। এসব পেঁয়াজের বেশির ভাগ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। দ্রুত এসব ট্রাক ছাড় করাতে না পারলে আবারও নতুন করে ক্ষতির মুখে পড়বেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।

এদিকে বাংলাদেশি আমদানিকারকরা তাদের ভারতীয় রফতানিকারক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পুরোনো এলসির আটকেপড়া পেঁয়াজ ছাড়করণে বার বার আবেদন জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বেনাপোল বন্দরের স্থানীয় বাজারে সঙ্কট দেখা দেয়ায় পেয়াঁজের দাম আবারও বাড়ছে। বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাইকারী বাজারে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা আর খুচরা বাজারে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে প্রতি কেজি পেয়াঁজ বিক্রি হয়েছে। ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ অর্ধেক নষ্ট হওয়ায় দাম বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

পেঁয়াজ আমদানিকারক শেখ ট্রেডার্সের শেখ মাহাবুব জানান, প্রতি বছর পেঁয়াজ নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড হয়। ভারত কখনও উৎপাদন সঙ্কট আবার কখনও রফতানি মূল্য তিনগুণ বাড়িয়ে আমদানি বন্ধ করতে বাধ্য করে। এ ক্ষেত্রে সঙ্কট মোকাবেলায় ভারত ছাড়াও বাইরের কিছু দেশের সঙ্গে সরকারের বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করা দরকার।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক আনু জানান, তারা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে এ পথে আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

পেঁয়াজ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ওপারের বিভিন্ন পার্কিংয়ে তাদের বেশ কিছু ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক ট্রাকের পেঁয়াজে পচন ধরেছে। নিষেধাজ্ঞার আগেই এসব ট্রাক বন্দর এলাকায় পৌঁছেছিল। দ্রুত এসব ট্রাক না ছাড়লে আবারও নতুন করে তারা লোকশানের মুখে পড়বেন।

বেনাপোল বন্দরের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা শুকর আলী জানান, ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি কম হচ্ছে। যা আসছে তার অর্ধেক বস্তা পচা পাওয়া যাচ্ছে। এতে বাজারে দাম কমছে না। বাইরে থেকে আমদানি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ করম বাজার অস্থিতিশীল থাকবে বলে মনে হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সঙ্কট দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। এ পর্যন্ত কোনো পেঁয়াজের ট্রাক দেয়নি ভারত। দেবে কি-না তাও নিশ্চিত জানাতে পারেনি।

তবে এ পথে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে অন্যান্য পণ্যের আমদানি ও রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০ দিনে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে দুই হাজার ৫৪৪ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য। তবে এসব পণ্যের মধ্যে কোনো পেঁয়াজের ট্রাক ছিল না। একই সময়ে ভারতে এক হাজার ২৭ ট্রাক বাংলাদেশি পণ্য রফতানি হয়েছে। তবে এসব রফতানি পণ্যের মধ্যে ৬৭ ট্রাক পদ্মার ইলিশ ছিল।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close