দেশজুড়ে

বিদেশি বোতলে বিষাক্ত ভেজাল মদ বিক্রি, গ্রেফতার ৫

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বিভিন্ন হোটেল, বার ও ক্লাব থেকে বিদেশি মদের খালি বোতল সংগ্রহ করে সেই বোতলে পানি, স্পিরিট, কোক, রং ওঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বিষাক্ত মদ তৈরি করছে একটি চক্র। আর এ মদ পান করলে মারা যাবেন যেকোনও ব্যক্তি, হতে পারেন বিকলাঙ্গও।

বুধবার (২১ আগস্ট) নকল মদ তৈরি চক্রের এক সদস্য ও তাদের চার সহযোগীকে গ্রেফতারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. নাছিম উদ্দিন (২৩), মো. ইকরামুল হক (৩২), স্বপন পাল (৫১), মো. ইমরান ফয়সাল (২১) ও জাহেদুর রহমান আরজু (৩০)। তাদের কাছ থেকে স্পিরিট, নকল লেভেল, ভেজাল মদ তৈরির বিভিন্ন ক্যামিকেল, বোতলের কর্ক জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (পশ্চিম) ফারুক উল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সম্প্রতি আকবরশাহ এলাকায় ভেজাল মদ খেয়ে তিন যুবকের মৃত্যুর পর এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয় আকবরশাহ থানায়। ঘটনার পর ভেজাল মদ তৈরির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে কাজ শুরু করে পুলিশ।

ফারুক উল হক বলেন, গত ১৩ আগস্ট নাছিম ও তার এক সহযোগীর কাছ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার বিনিময়ে এক বোতল বিদেশি মদ কেনেন বিশ্বজিৎ মল্লিক ও তার ভাই টিটু মল্লিক। পরে বিশ্বজিৎ, শাওন মজুমদার জুয়েল, উজ্জ্বল বণিক ও মিল্টন গোমেজ মিলে সেই মদ পান করেন। মদ পান করে তারা সবাই অসুস্থ হয়ে গেলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে মারা যান বিশ্বজিৎ, শাওন মজুমদার জুয়েল ও মিল্টন গোমেজ এবং উজ্জ্বল বণিক বিকলাঙ্গ হয়ে যান।

অসুস্থ উজ্জ্বলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তারা যেখান থেকে মদ সংগ্রহ করেছিল, তা অনুসন্ধানে নামে পুলিশ। এর সূত্র ধরে মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে আকবরশাহ কৈবল্যধাম মন্দিরের পাশ থেকে একটি বিদেশি মদের বোতলসহ মো. নাছিম উদ্দিনকে (২৩) গ্রেফতার করা হয়। নাছিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়- মদের বোতলটি আসল হলেও মদ নকল। পরে নাছিমের দেওয়া তথ্যে তার বাসা থেকে নকল মদ তৈরির বিপুল উপকরণ উদ্ধার করা হয় বলে জানান উপ-কমিশনার (পশ্চিম) ফারুক উল হক।

তিনি বলেন, নাছিমকে জিজ্ঞাসাবাদে নকল মদ তৈরি সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। তার দেওয়া তথ্যে নকল মদ তৈরি প্র্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত চারজনকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে রয়েছে স্পিরিট বিক্রেতা, মদের নকল লেবেল তৈরিকারক ও ছাপাখানার লোক।

পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক উল হক জানান, এক বোতল নকল মদ তৈরিতে খরচ হয় মাত্র ২০০ টাকা। বোতলগুলো এমনভাবে প্যাকেট করা হয়, এতে বুঝার উপায় থাকে না এটি নকল নাকি আসল। এক বোতল নকল মদ তারা ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে। মূলত অধিক লাভের আশায় তারা এসব কাজ করে আসছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্য সদস্যদের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close