দেশজুড়ে

পদ্মাসেতু নিয়ে গুজব: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজর রাখছে পুলিশ

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্খিত পদ্মা সেতু। আর এই সেতুর মাধ্যমে যুক্ত করা হচ্ছে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তর। ছয় কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। যার পুরো অর্থই বহন করছে নিজস্ব অর্থায়নে। আর এর মধ্যেই গত কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্ৰুপ, পেজ  ব্যক্তিগত আইডি থেকে ইনবক্সে পৌঁছে যাচ্ছে পদ্মাসেতু নিয়ে এক ভয়ংকর এবং একইসাথে হাস্যকর গুজব ! বলা হচ্ছে, পদ্মাসেতু প্রকল্পে এক হাজার মানুষের মাথা প্রয়োজন; আর এই মাথা সংগ্রহের কাজে সারাদেশে টিম বেরিয়েছে !

শিক্ষিত শ্রেণীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা এই বিষয়টিকে নিয়ে হাসাহাসি করলেও একশ্রেণীর মানুষ, বিশেষ করে কুসংস্কার আচ্ছন্ন অশিক্ষিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা এই মিথ্যা বার্তাটিই পুনরায় শেয়ার করছে আরেকজনের কাছে। যাতে করে একশ্রেণীর মানুষের মাঝে ভীতির জন্ম দিচ্ছে এই গুজব। এর গুজবের ফলেই সাম্প্রতি বরিশাল নগরের গির্জা মহল্লা এলাকা থেকে এক শিশুর কান্নাকাটি দেখে লোকজনের সন্দেহ হলে এক নারীকে আটক করে জনতা। সঠিক তথ্য যাচাই তাকে ছেলেধরা বলে আখ্যা দিয়ে নাজেহাল করে উক্ত নারীকে। এক পর্যায়ে জনতা উক্ত নারীকে পুলিশে দেওয়ার পর, পুলিশি জেরায় জানা যায়- ঘটনা কিছুই নয়, ওই নারী শিশুটির স্বজন হন।

অনেকেই বেশ কয়েক বছরের পুরানো ভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে নিহত হওয়া মানুষের মাথা কাটা ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে জানাচ্ছেন পদ্মা সেতুর জন্য এই মানুষটির মাথা কেটে নেয়া হয়েছে। যার পুরাটাই গুজব। তবে আশার কথা এই যে, ইতোমধ্যেই এই গুজবকে প্রতিহত করতে উঠেপড়ে লেগেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার টেরোরিজম ইউনিট। ফেসবুক সহ সকল যোগাযোগ মাধ্যমে কঠোর নজরদারির মাধ্যমে বের করা হচ্ছে, সর্বপ্রথম করা ছড়িয়েছে এই গুজব। এমনকি যাদের টাইমলাইনে পাওয়া যাচ্ছে এই গুজব, তাদের আইডি ট্র্যাক করার মাধ্যমে খোঁজখবর করছে পুলিশ।

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি জানান জানান, ‘মূলত শিক্ষার অভাব থেকেই এমনটা হচ্ছে। তাছাড়া শুরু থেকেই পদ্মাসেতু নিয়ে নানা কথা বলেছে একটি মহল’। বাংলাদেশের সাথে বিশ্ব ব্যাংক ১২০ কোটি ডলার ঋণ চুক্তি করে। পরবর্তীতে বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ আনে। দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত করে বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব ব্যাংকের দেয়া ১২০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা প্রত্যাহার করে বাংলাদেশ। এরপর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও দূরদর্শিতায় নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতু।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close