দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

ইরফান ও দেহরক্ষী জাহিদ ৩ দিনের রিমান্ডে

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ রাজধানীতে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে হত্যা চেষ্টা মামলায় বরখাস্ত ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে এ মামলায় প্রত্যেককে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

বুধবার (২৭ অক্টোবর ) ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নুর শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে সকালে কারাগার থেকে দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় কারাগারের গারদে রাখা হয় তাদের। দুপুর ১২টায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দুই আসামিকে ধানমন্ডি থানার মামলায় গ্রেফতার দেখান। তারপর একই আদালতে দুই আসামির রিমান্ড শুনানি হয়।

এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) আশফাক রাজীব হায়দার আসামি ইরফান সেলিম ও জাহিদকে গ্রেফতার দেখানো এবং সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। পরে আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে (শোন অ্যারেস্ট) গ্রেফতার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন।

এ মামলায় গত সোমবার (২৬ অক্টোবর) এমপি হাজী সেলিমের গাড়িচালক মিজানুর রহমানের একদিন এবং মঙ্গলবার এরফানের ব্যক্তিগত সহকারী এবি সিদ্দিকী দীপুর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত সোমবার সকালে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর এরফান সেলিম, তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদ, এবি সিদ্দিক দীপু এবং গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমদ খান বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় মামলায় সোমবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফানের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। ৮তলা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে অভিযান চলে। ইরফানের বাসা থেকে বেশ কিছু অবৈধ জিনিস উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ছিল একটি আগ্নেয়াস্ত্র, যেটা অবৈধ। সেটির কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। এছাড়া ৫-৬ লিটার মদ ও ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পাওয়া যায় বেশ কিছু বিয়ারের ক্যান।

অভিযান চালিয়ে হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান ও তার দেহরক্ষী জাহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। পরে ইরফানকে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে এক বছর ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে আরও ছয় মাস কারাদণ্ডাদেশ দেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। আর জাহিদুলকে অবৈধ ওয়াকিটকি বহনের দায়ে ছয় মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দণ্ডিত হওয়ায় ইরফানকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তাকে বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ।

গত ২৫ অক্টোবর রাতে ধানমন্ডিতে ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও ২৬ অক্টোবর ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওয়াসিফ। মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে।

মামলায় বলা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। এরপরই গাড়ি থেকে কয়েকজন বের হয়ে ওয়াসিমকে কিলঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান। পরে তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close