আশুলিয়াদেশজুড়েপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ
ছেলে-মেয়ের বৈষম্য আসে পরিবার থেকেইঃ উপাচার্য
নিজস্ব প্রতিবেদক: ছেলে-মেয়ের বৈষম্যটা আসে পরিবার থেকেই। খাবার, পোশাকসহ মুটামুটি সবকিছুতেই চলে এই বৈষম্য। এই জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি) উপাচার্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আবুল হোসাইন।
আজ মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সাভারের মির্জানগর এলাকায় গণস্বাস্থ্যের পিএইচএ মিলনায়তনে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় গবি উপাচার্য আরও বলেন, উচ্চশিক্ষায় নারীদের পদাচরণ আরো বাড়াতে হবে। পুরুষশাসিত সমাজ থেকে বের হয়ে আসতে ও সচেতনতা বাড়াতেই নারীদের সুশিক্ষিত করে তুলতে হবে।
এর আগে গতকাল আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে ‘টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য’-কে প্রতিপাদ্য করে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) মানববন্ধন, আলোচনা সভা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
এ আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন গবি ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফুন্নেছা মায়া।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক আকলিমা খাতুন, গবি রেজিস্ট্রার এস তাসাদ্দেক আহমেদ, নারীপক্ষের আন্দোলন সম্পাদক তামান্না খান পপি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
এ আয়োজনে ৬ জন মহীয়সী নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করা হয়।
তারা হলেন- সিরাজগঞ্জ ৭ নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা ভানু খাতুন, রাহেলা খাতুন, ছামেনা খাতুন ও বিশ্রামগঞ্জ, ২ নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা গীতা মজুমদার, ইরা কর ও পদ্মা রহমান। এসময় তাদেরকে গণস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানটি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস্ লিমিটেড যৌথভাবে আয়োজন করেছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মী ও গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাথী রাণী বলেন, নওগাঁ জেলার এক দিনমজুরের মেয়ে আমি। প্রথাগত সমাজ ব্যবস্থার বাইরে এসে আমার বাবা আমাকে পড়ালেখা করিয়েছেন। অনেক প্রতিকূলতা পার করতে হয়েছে শুধুমাত্র নারী হওয়ার জন্য। নারীদের বৈষম্য শেষ হয়ে যাক এই আমার চাওয়া।
গবি রেজিস্ট্রার এস তাসাদ্দেক আহমেদ স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম তখন প্রতি ১২০ জনে ৯ জন ছাত্রী ছিল, কিন্তু এখন আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি প্রতি ৩০০ জনে প্রায় ২০০ জনই ছাত্রী। এই উন্নতিই তো নারী অগ্রযাত্রার প্রতিচ্ছবি। পারিবারিক শিক্ষা এই ক্ষেত্রে খুবই জরুরি।
৭ নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা রাহেলা খাতুন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি আমরা। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় এখন আমরা ভাল আছি। সকলের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে এখন মনে হয় যে মুক্তিযুদ্ধ করে আমি স্বার্থক।
আমন্ত্রিত অতিথি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাছিম আক্তার হোসাইন মায়ের জাতি হিসেবে সকল নারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের রতি সম্মান প্রদর্শন করে বলেন, প্রতিদিনই হোক নারী দিবস। নারীরা স্বতন্ত্র, নারীরা সবার থেকে আলাদা। এই চিন্তাচেতনা নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারলেই আমরা প্রতিটা ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে পারবো। তখনই পৃথিবীর পরিবর্তন সম্ভব।
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফুন্নেছা মায়া বলেন, নারীদের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম, অমানবিক নির্যাতন সবকিছুতেই মুখ বুঝে সহ্য করে নিতে হয়। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র সবসময়ই নারীবান্ধব। আমি মনে করি পারিবারিক সুশিক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নারী-পুরুষের পরিচয় ছাপিয়ে সবাই মানুষ এই পরিচয় হোক সবার, এই আমার প্রত্যাশা।
/এএস