শিক্ষা-সাহিত্য

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছে সরকার

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে সরকার। সেই লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

বিভিন্ন তথ্যসূত্র বলছে, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার হার ছিল ১ শতাংশর এর কম যা বর্তমানে ১৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২০ সাল নাগাদ কারিগরি শিক্ষায় ২০ শতাংশ ভর্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিপ্লোমা কোর্সে আসন সংখ্যা ১২,৫০০ হতে ৫৭,৭৮০ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ভর্তির ক্ষেত্রে মহিলা কোটা ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষায় সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনায়  নারী শিক্ষা ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে; শিক্ষার হার বাড়ছে। বর্তমানে প্রাথমিক স্তরে মেয়েদের অংশগ্রহণের হার দাঁড়িয়েছে ৫১ শতাংশ  আর ছেলেদের ৪৯ শতাংশ।  মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে মেয়েদের অংশগ্রহণ ৫৩ শতাংশ ও ছেলেদের ৪৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে আরো ২৩ জেলায় পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। যার ফলে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর সংখ্যা দাঁড়াবে ৭৫ এ। বর্তমানে যার সংখ্যা ৫২টি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে ৪টি মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট স্থাপন করা হবে যার সংখ্যা সব মিলিয়ে দাঁড়াবে ৮ এ। বর্তমানে মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট রয়েছে যথাক্রমে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, ও চট্টগ্রামে। বেসরকারি ক্ষেত্রে ৪৫৭টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ প্রায় ৭,৭৭৩টি বিভিন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ১,৬৩০টি কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ১৮,৬৬১ জন শিক্ষক কর্মচারীকে এমপিওভূক্ত করা হয়েছে। সরকারি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানে ২০০৮ সালে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১২,৩৭৫ বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭,৭৮০ জনে।

এছাড়া ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগে ৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। অবশিষ্ট চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে ৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ১০০টি উপজেলায় ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অবশিষ্ট ৩৮৯টি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল এবং কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। তাছাড়া ৮টি বিভাগীয় শহরে ৮টি মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

অপরদিকে মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে ১,২৬৬ কোট টাকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। ১০১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৫টি মাদ্রাসায় শিক্ষার উন্নত পরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন, শ্রেণীকক্ষ আধুনিকায়ন ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ৫২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মাদ্রাসার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অদ্যাবধি ২৮১টি মাদ্রাসায় কারিগরি শিক্ষা কোর্স চালু করা হয়েছে। সরকার ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে এবং কওমি মাদ্রাসায় ডিগ্রীকে সরকার স্বীকৃতি প্রদান করেছে।  কওমি মাদ্রাসা সমূহের দাওরায়ে হাদিস (তাকমীল) এর সনদকে মাস্টার ডিগ্রী (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান আইন-২০১৮ প্রণয়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।  বাংলাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধিভুক্ত ৯,৩৯৭টি মাদ্রাসা রয়েছে; দেশব্যাপী  আরও ১,৮০০ নতুন মাদ্রাসা নির্মাণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close