আমদানি-রপ্তানীপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিশ্ববাজারে দাম বেশি হওয়ায় দেশের বাজারেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার।

মঙ্গলবার (১৪ জুন) বিদ্যুৎ ভবনে বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিপিএমআই) আয়োজিত এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান।

এ সময় তিনি বলেন, মূল্য সমন্বয় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে এখনও কিছু নির্ধারিত হয়নি।

নসরুল হামিদ বলেন, যেভাবে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম বাড়ছে সেটা খুব অস্বাভাবিক। আমাদের চিন্তা করতে হবে এ অবস্থা কতদিন চলবে। বিপিসি প্রতিদিন শতকোটি টাকা লোকসান গুনছে। দাম পরিবর্তন করব কিনা, কোথায় সমন্বয় করব বা আদৌ করব কিনা-এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করছি। এরপর সরকারের কাছে প্রস্তাব করব।

লোকসানের দায় কে নেবে? প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আমাদের গ্রাহকরা আছেন, যারা জ্বালানি পরিবহন করেন তাদের ওপর কোনো চাপ পড়ুক তাও আমরা চাই না। আমরা চাই সমন্বয় করতে। সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। বিপিসি প্রতিদিন শতকোটি টাকা লোকসান গুনছে। আমরা আসলে কত এই লোকসান করব?

‘আমাদের পাশের দেশগুলো দাম সমন্বয় করে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাড়লে বাড়ায়, কমলে কমায়। আমার এ মুহূর্তে সেদিকে যাব কি না, সেটা চিন্তার বিষয়। এ অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে ভারতের সঙ্গে এখন আমাদের তেলের দামের অর্ধেক পার্থক্য তৈরি হয়ে গেছে। সে তুলনায় এখনও আমরা স্থিতিশীল অবস্থায় আছি। আমরা কতটা বাড়াব সে জায়গাটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। যাত্রীদের ওপর কী প্রভাব পড়বে, পরিবহনে কী প্রভাব পড়বে সব আমাদের ভাবতে হচ্ছে।

জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে, এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে লিটার প্রতি ডিজেলের দাম অনেক কম। জুনে বাংলাদেশে ডিজেলের লিটার প্রতি দাম যেখানে ৮০ টাকা, সেখানে ভারতে এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। একইভাবে পাকিস্তানে ৯৪ টাকা, নেপালে ১১৩ টাকা, শ্রীলঙ্কায় ১০১ টাকা। এছাড়া সবচেয়ে বেশি এখন হংকংয়ে। দেশটিতে ২০৫ দশমিক ৫২ টাকায় ডিজেল বিক্রি হচ্ছে। (ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য ৯২ টাকা ধরে এ হিসেব করা হয়)।

করোনার ধাক্কা সামলে ওঠার আগে রাশিয়া ও ইউক্রেন সংঘাতে বিশ্ব অর্থনীতি টালমাটাল। বিশ্ব বাজারে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম। যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও।

এদিকে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের দাম বাড়ানো ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। বাজেটে বলা হয়েছে, করোনার পর হঠাৎ চাহিদা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বেড়েছে। এর সঙ্গে গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় সব পণ্যের দামই বাড়তে শুরু করেছে।

অপরদিকে সম্প্রতি প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলে দাম বেড়ে ১১৩ ডলার ছাড়িয়েছে। তাছাড়া সাম্প্রতিক বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার হার প্রায় ৬৫ শতাংশ।

এছাড়া গেল সপ্তাহে ইউরোপের বাজারে দাম বাড়ানোর পর এশিয়ার বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দেয় সৌদি আরব। যাকে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি বলে অবহিত করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় তেল উৎপাদনকারী কোম্পানি আরামকো জানায়, সৌদি আরব এশিয়ায় আরব লাইট ক্রুডের অফিশিয়াল বিক্রয়মূল্য জুনে ৪ দশমিক ৪০ ডলার প্রিমিয়াম থেকে বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫০ ডলার প্রিমিয়াম করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close