খেলাধুলাপ্রধান শিরোনাম

দুর্দান্ত সাকিবে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ২৪১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে এক পর্যায়ে হারের শঙ্কা দেখা দিয়েছিল বাংলাদেশ শিবিরে। তবে সাকিব আল হাসানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটি ৩ উইকেটে জিতেছে টাইগাররা। এই জয়ে একই সঙ্গে সিরিজও নিশ্চিত করেছে তামিম ইকবালের দল।

শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১২ রান। হাতে ছিল ৩ উইকেট। টেন্ডাই চাতারার করা পেনাল্টিমেট ওভারে সাকিব ও সাইফউদ্দিন মিলে ৯ রান নেন। ফলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩ রান। প্রথম বলেই চার হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ৯৬ রানে।

হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে জিম্বাবুয়ের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নামেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুজনে। এরপর ধীরে ধীরে মনোযোগ দেন রানের গতি বাড়ানোর দিকে।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ব্রেন্ডন টেলরের হাতে জীবন পেয়েছিলেন তামিম। তবে জীবন পেয়েও বেশি রান করতে পারেননি তিনি। লুক জংওয়ের বলে সিকান্দার রাজার দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে ২০ রানে সাজঘরে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক।

তামিমের বিদায়ের পর ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটনও। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা এ ব্যাটসম্যান গারাভার বল পুল করতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। করেন ২১ রান।

এরপর মোহাম্মদ মিঠুন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত কেউই ভালো করতে পারেনি। দুজনেই ব্যাট হাতে ছিলেন ব্যররথ। সাজঘরে ফেরার আগে মিঠুন ২ ও মোসাদ্দেক ৫ রান করেন।

৭৫ রানে চার উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন সাকিব ও রিয়াদ। দুজনের ব্যাটে ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এই জুটি ৫৫ রানের বেশি স্থায়ী হয়নি।

মুজারাবানির বলে কাট করতে গিয়ে ঠিকভাবে ব্যাটে বলে করতে পারেননি রিয়াদ। ফলে এজ হয়ে বল সোজা চলে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। এর আগে তিনি করেন ২৬ রান। তার জায়গায় নেমে ৬ রান করেই জিম্বাবুয়েকে উইকেট উপহার দিয়ে আসেন মেহেদী মিরাজ।

রিয়াদ ফেরার পরের ওভারে সিকান্দার রাজার বলে কভারে চার হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের ৪৫তম অর্ধশতক পূরণ করেন সাকিব। ৫৯ বল খেলে এই মাইলফলকে পৌঁছান তিনি। তার সঙ্গে ইনিংস এগিয়ে নেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। কিন্তু ১৫ রানে থাকা অবস্থায় সিকান্দার রাজার সাধারণ মানের একটি বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি।

সাইফউদ্দিন যখন নামেন, তখন জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার আরো ৬৮ রান। হাতে ছিল ৩ উইকেট। সাকিবকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে ধীরে ধীরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত এই অলরাউন্ডার অপরাজিত থাকেন ২৮ রানে।

জিম্বাবুয়ের হয়ে ২ উইকেট নেন জংওয়ে। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন মুহারাবানি, গারাভা, মাধেভেরে ও রাজা।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর। দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন তাদিওয়ানাশে মারুমানি ও তিনাশে কামুনহুকামওয়ে। প্রথমজন নিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামলেও পরের জনের এ ম্যাচেই অভিষেক হয়।

নিজের প্রথম ডেলিভারি ওয়াইড দিলেও দ্রুতই নিজের চেনা লাইন-লেন্থে ফিরে আসেন তাসকিন আহমেদ। ফলও পেয়ে যান দ্রুত। নিজের প্রথম ওভারের শেষ বলে আফিফ হোসেনের ক্যাচে পরিণত করে কামুনহুকামওয়েকে সাজঘরে ফেরান তিনি। অভিষিক্ত এই ব্যাটসম্যান করেন ১ রান।

এরপর ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া রেগিস চাকাভাকে সঙ্গে নিয়ে পাল্টা আক্রমণে যান মারুমানি। তাসকিনের করা ইনিংসের পঞ্চম ওভারে পরপর দুই বলে জীবন পান মারুমানি। রিয়াদের সুযোগটি কঠিন থাকলেও বেশ সহজ ক্যাচ তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন সাইফউদ্দিন।

অবশ্য জীবন পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি মারুমানি। পরের ওভারে এসেই মেহেদী হাসান মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। এর আগে ১৮ বল খেলে করেন ১৩ রান।

দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর চাকাভা ও ব্রেন্ডন টেলরের ব্যাটে বেশ ভালোভাবে ম্যাচে ফেরে জিম্বাবুয়ে। পাল্টা আক্রমণে ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিচ্ছিলেন তারা। তবে তাদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেন সাকিব।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close