দেশজুড়ে

দুর্নীতির মামলার রায়ের সঙ্গে সরকারের কোনো যোগসূত্র নেই: ওবায়দুল কাদের

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির দুই নেতার দুর্নীতির মামলার রায়ের সঙ্গে সরকার ও আওয়ামী লীগের কোনো যোগসূত্র নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বুধবার (৩১ মে) এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের উল্লেখ করেন, ‘ফরমায়েশি রায়’ বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল মঙ্গলবার যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা দেশের আইন ও পবিত্র আদালত অবমাননার শামিল।

হাইকোর্ট গতকাল জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদকে দেওয়া ৯ বছর ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন। গতকালই এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব ওই রায়কে ‘ফরমায়েশি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। সেই মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আজ বিবৃতি দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপির মহাসচিবের দেওয়া ওই বক্তব্যকে ‘দায়িত্বহীন’ বলে বর্ণনা করে বলেন, দুর্নীতির মামলায় বিএনপির দুই নেতাকে নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজা বহাল রেখে উচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন, সে সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিবের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বক্তব্য দেশবাসীকে হতাশ করেছে।

বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, সে প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মার্কিন নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করার পর বিএনপি তাদের বিদেশি প্রভুদের কাছ থেকে করুণা প্রাপ্তির আশায় সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। উচ্চ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি বলা তাদের সেই চলমান ষড়যন্ত্রেরই অংশ। এই ধরনের অপরাধের জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে তাদেরকে অচিরেই জবাবদিহি করতে হবে।

বিএনপির দুই নেতার পরিণতি তাদের ধারাবাহিক অপরাজনীতিরই ফসল বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির দুই নেতার দুর্নীতির মামলার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো যোগসূত্র নেই। ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং তাদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ার পর নিম্ন আদালত শাস্তিমূলক রায় প্রদান করে। প্রায় ১৬ বছর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ করে আদালত তাদের সাজা প্রদান করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের পবিত্র সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও আইন ও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এমনকি বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড এবং বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলায়ও ছাত্রলীগের নেতারা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ভোগ করছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশের বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা অভিযোগ করেন, বিএনপিই বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করেছিল।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেছে এবং দলের চিহ্নিত শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দিয়েছে। অনুরূপভাবে তারা বিজ্ঞ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি রায় বলে দেশের উচ্চ আদালত এবং পবিত্র সংবিধানকে অবমাননা করেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close