দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

পদ্মা সেতুর ৩১তম স্প্যান বসছে আজ

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ পদ্মা সেতুতে বসতে যাচ্ছে ৩১তম স্প্যান। বুধবার (১০ জুন) ২৬ ও ২৫ নম্বর খুঁটিতে বসবে এই স্প্যান। এ দুই খুঁটির মাঝামাঝি শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটের চ্যানেল। ৩১৪০ মেট্রিক টন ওজনের ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্প্যানটি স্থাপনে নিরাপত্তার স্বার্থে ৮ ঘণ্টার জন্য এ নৌরুট বন্ধ রাখা হচ্ছে।

এ নৌরুটের ফেরি, লঞ্চ, স্পিডবোট, ট্রলারসহ সব ধরনের জলযান বুধবার সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলাচল বন্ধ রাখার জন্য বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএকে চিঠি দিয়েছে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ।

বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, এ ৮ ঘণ্টায় বিকল্প রুটে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি চলাচলের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ৩১তম স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তের শেষ স্প্যান। এটি বসে গেলে সেতুর বিশেষ একটি ধাপ সম্পন্ন হবে। এতে বসে যাওয়া ৩১তম স্প্যানের মধ্যে ২৯টি স্প্যান একসঙ্গে যুক্ত হবে। অর্থাৎ জাজিরা থেকে এই স্প্যান যুক্ত হয়ে মাওয়ার কাছাকাছি চলে আসবে। সেতুর ৪২টি খুঁটির মধ্যে ৪২তম খুঁটি থেকে ১৩তম খুঁটি পর্যন্ত এই সেতু বন্ধন হতে যাচ্ছে।

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ব্যস্ততম নৌরুটের কারণে ২৬তম খুঁটি স্থাপনে বিলম্ব হয়। সেখানেও বিকল্প চ্যানেল কেটে দিয়ে খুঁটিটি স্থাপন করতে হয়েছিল। বর্ষা মৌসুমে জাজিরার ৪২তম খুঁটি থেকে মাওয়ার ১৩তম খুঁটি এলাকা পর্যন্ত লাখ লাখ ঘন ফুট পলি পরে নব্যতা সৃষ্টি হয়। তাই ভরা বর্ষার আগেই এই স্প্যান স্থাপন করা না গেলে নাব্যতা সঙ্কটের বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হতো। তাই বর্ষার পলি আসার আগেই এই স্প্যান স্থাপন হতে যাচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্টরা খুশি। এখন মাওয়া প্রান্তে আর মাত্র ১০টি স্প্যান বসানো বাকী থাকছে। যা ভরা বর্ষায়ও খুঁটির ওপর বসাতে নাব্যতা বাঁধা হতে পারবে না। কারণ মাওয়ার এই অংশে মূল পদ্মা। সব সময় স্রোত বইতে থাকে। এখানে পলি জমতে পারে না। এই অংশের ৫, ৬ ও ৭ নম্বর খুঁটিতে দুই স্প্যান বসেছে আগেই। এখন এই দুই স্প্যানের দু’পাশে বাকি ১০ স্প্যান বসে গেলেই পদ্মা সেতুর ৬.১৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান হবে।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, ৩১তম স্প্যানটি আগামী ১১ জুন বৃহস্পতিবার বসানোর সব কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ১১ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত বৈরী আবহাওয়ার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তাই কোনো রকম ঝুঁকি না নিয়ে একদিন আগে বুধবার এটি বসানোর পরিকল্পানা করা হয়েছে।

এদিকে “৫-এ” নম্বর স্প্যানটি মাওয়ার কুমারভোগ ইয়ার্ড থেকে পূর্বনির্বারিত বুধবার সকালেই রওনা হচ্ছে। সাড়ে তিন হাজার ধারণ ক্ষমতার ভাসমান এটি ইয়ার্ড থেকে পাজা করে নিয়ে সরাসরি ২৫ ও ২৬ নম্বর খুঁটির সামনে প্লেস করবে। এরপরই ১১টা থেকে নৌরুট বন্ধ হয়ে যাবে। পরে ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে বসিয়ে দেয়া হবে খুঁটিতে। সেই অনুযায়ী বিশেষ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

সেতু বিভাগের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. আবু নাছের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আগামী বুধবার যাত্রাবাড়ী-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়ক ব্যবহারকারী যানবাহনকে বিকল্প রুটে চলাচলের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। মহাসড়ক এবং জলপথ ব্যবহারকারীদের সাময়িক এ অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে সেতু বিভাগ।

এর আগে গত ৩১ মে পদ্মা সেতুর ৩০তম স্প্যান খুঁটির ওপর বসানো হয়। স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তের ২৬ ও ২৭ নম্বর খুঁটির ওপর স্থাপন করা হয়। এতে সেতুর দৃশ্যমান হয় সেতুর ৪৫০০ মিটার বা সাড়ে ৪ কিলোমিটার। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি দ্বিতল হবে, যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। সেতুর এক খুঁটি থেকে আরেক খুঁটির দূরত্ব প্রায় ১৫০ মিটার। একেকটি খুঁটি ৫০ হাজার টন লোড নিতে সক্ষম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close