শিক্ষা-সাহিত্য

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উদ্ভাবন কথা বলা রোবট “মিরা”

মো. রাকিবুল হাসান, গবি প্রতিনিধিঃ গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ছয় শিক্ষার্থীর যৌথ উদ্দ্যোগে তৈরি করেছে ( Mobile & Intelligent Robot for Advanced Assistance-MIRRA) রোবট মিরা।

তরুণ উদ্ভাবকদের এই রোবটটি কোনো রকম এক্সটার্নাল কন্ট্রোলিং ছাড়াই পূর্ণাঙ্গ কাজ করতে পারে ।

কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ২০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী  মোঃ রিফাত, মাহতাবুর রহমান সবুজ, মাহমুদা আক্তার নিঝুম ,মারুফ হোসাইন, সাফিক হাসান, শারমিন নাহার তোহফা বিভাগের চূড়ান্ত প্রজেক্ট হিসেবে জমা দেয় তাদের এই উদ্ভাবন।

আড়াই মাসের  প্রচেষ্টা ও ৪৭ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত রোবটে থাকছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সী, ওপেন সিভি,মেশিং লার্নিং, পি আইডি  কন্ট্রোলসহ অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি।

নিজেদের তৈরী বোরট নিয়ে মাহতাবুর রহমান সবুজ বলেন, “ এতদিন রোবট সম্পর্কে শুধু শুনলাম, এখন নিজেরা তৈরী করলাম। সফ্ল হয়ে খুবই ভালো লাগছে।”

নিজেদের তৈরী রোবটের বিশেষ বৈশিষ্ট্য জানান দিতে গিয়ে সবুজ বলেন, “আমাদের রোবট এর প্রধান ফিচার হচ্ছে এটি পোর্টেবল এবং অটোমেটেড অর্থাৎ কোন এক্সটারনাল কন্ট্রোলিং ছাড়াই পুর্ন কাজ করতে সক্ষম।

অর্থাৎ আমাদের রোবট এর সফটও্যার চালুর পরে একে কন্ট্রল করতে হয় না, নিজে নিজেই সব কাজ করতে পারে।

বর্তমানে আমাদের রোবট মানুষের সাথে ন্যাচারালি কথা বলতে পারে বিভিন্ন জটিল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে ফিজিক্যালি এবং ভার্চুয়ালি বিভিন্ন কাজে সাহায্য করতে পারে।

ভার্চুয়াল কাজ বলতে বলা যায় ব্যাবহারকারীর কোন ইমেল সেন্ড করা ফেইসবুকের নটিফিকেশন চেক করা, পছন্দের গান বাজানো, নির্দিষ্ট কাজের কথা মনে করিয়ে দেয়া (রিমাইন্ডার), দৈনিক এবং আগাম আবহাওয়া পূর্বাভাস জানিয়ে দেয়া, সময় তারিখ জানানো ইত্যাদি।

ফিজিক্যাল বলতে বলা যায় আমাদের রোবট এর সাথে মাল্টি এক্সিস এ মটর রয়েছে যা রোবটের আঙ্গুল, কনুই, কাধ, ঘাড়, মাথা সহ বিভিন্ন অঙ্গ নারানো তে সাহায্য করে। আপনি রোবট কে ইন্সট্রাকশনের মাধ্যমে অঙ্গভঙ্গি করাতে পারবেন।

আপনার কথা অনুযায়ী সে তার বিভিন্ন অঙ্গ নাড়াতে পারবে। আপনার সাথে হাই ফাইভ অথবা হেন্ডশেক করতে পারবে।  আপনাকে বিভিন্ন পোজ দিয়ে দেখাতে পারবে। কাজ করার সময় আপনার কফির কাপ ধরে রাখতে পারবে ইত্যাদি।

তাছাড়া সে আপনার সাথে রক পেপার সিজার খেলতে পারবে। জোকস শুনাতে পারবে। তার সাথে যারা (ব্যাবহারকারি) কথা বলবে তাদের ইনফরমেশন (নাম, জন্মদিন, তার ব্যাক্তিগত তথ্য ইত্যাদি) মনে রাখবে এবং পরবর্তিতে প্রয়োজন হলে ঐ তথ্যের উপর ভিত্তি করে কনভার্সেশন চালাবে। এছাড়াও কথা বলার সময় বিভিন্ন ন্যাচারাল অংভঙ্গি করবে ইত্যাদি। ”

রোবট মিরা তৈরীতে বিভিন্ন  প্রোগ্রামিং কোড ব্যাবহার করতে হয়েছে ক্ষুদে ৬ বিজ্ঞানীর।

ফ্রেইমওার্কের ওপর রোবট তৈরী করা হয়েছে  তা লিখা হয়েছে জাভা কোডে। রোবটের স্ক্রিপ্ট যা রোবট কে চালানোর বিভিন্ন ইন্সট্রাকশন দেয় তা লিখা হয়েছে পাইথনে। ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোসেসিং এ ব্যবহার করা হয়েছে  এ আই এম এল কোড। হার্ডওয়্যার কনফিগারেশনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ডট কনফ (কনফিগারেশন) কোড। সর্বমোট কোডের দৈর্ঘ্য ১২ থেকে ১২ হাজার লাইন।

উল্লেখ্য, রোবট মিরা’র দেহের উপরের অংশ তৈরী হলেও নিচের অংশের কাজ অসম্পূর্ণ। মিরা এখনো মানুষের মত চলাফেরা করতে পারে না। রোবটটির আরো উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে এটি এখনো রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (R&D) প্রোগ্রেসের  মধ্যে আছে।

/আরএম/আরএইচ

 

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close