দেশজুড়ে

বন্যার পানি নেমে গেলেও রয়ে গেছে কৃষকের ক্ষত

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: বন্যা কবলিত দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও রয়ে গেছে ক্ষতচিহ্ন। অধিকাংশ এলাকায়ই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বীজতলাসহ ফসলের ক্ষেত। মৌসুমের শুরুতেই এমন ক্ষতিতে লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষকরা। তবে, আগাম রবি ফসল আবাদসহ ক্ষতি পোষাতে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

জামালপুর: চলতি বন্যায় জামালপুরে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে রোপা আমনের বীজতলা, মরিচ, বেগুন, ভুট্টা ও কলাসহ বিভিন্ন শাক-সবজির ক্ষতিতে দিশেহারা কৃষক। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০০ কোটি টাকা।

গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় সড়ক ও বাঁধের পাশাপাশি কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়েছে ১৪ হাজার হেক্টর জমির পাট ও বিভিন্ন শাক-সবজির বীজতলা। আমন মৌসুমে ধান চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক।

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে বন্যার পানি সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে কৃষিক্ষেত্রে। আড়াই হাজার হেক্টরের আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্তসহ পানিতে তলিয়ে যায় ১৯ হাজার হেক্টর ফসলের ক্ষেত। এখনো অনেক সবজি বাগানে পানি জমে থাকায় পিছিয়ে পড়ছে আমন আবাদ।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান বলেন, যেসব নিচু এলাকায় এখনও অনেক পানি জমে আছে সেসব অঞ্চলের পানি দ্রুত না সরলে এসব জমিতে আমরা কৃষকদের আগাম রবি শস্য লাগানোর পরামর্শ দেব।

শরীয়তপুর: পদ্মার পানিতে তলিয়ে যায় শরীয়তপুরের নড়িয়া, জাজিরা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের পাট, আখসহ বিভিন্ন সবজি বাগান। অনেক ক্ষেত এখনো জলমগ্ন থাকায় আবারও চাষাবাদ নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েক হাজার কৃষক।

শেরপুর: জেলার পাঁচটি উপজেলার ৫২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩০টি বন্যাকবলিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নে কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, সড়ক যোগাযোগ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে রোপা আমন বীজতলা, সবজি, আউশ আবাদ, পাট ও ফলবাগান নষ্ট হয়ে প্রায় ৩০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জেলায় তিন হাজার ১৩২টি মৎস্য খামার, পুকুর ডুবে ও পাড় ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দুই হাজার ৪০৬ জন চাষী। মাছ ও পোনা ভেসে গিয়ে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২১ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

শেরপুরে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে জেলা প্রশাসনের আওতায় ইতোমধ্যে ১০৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ দেড় লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এলাকাগুলোতে ৫২টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। তারা বিনামূল্যে দুর্গত মানুষের মাঝে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন ও ওষুধ বিতরণ করছে। এছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকেও দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ সহায়তা পৌছে দেওয়া হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে পাঁচটি।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close