ব্যাংক-বীমাশিল্প-বানিজ্য

সুদের হার এক অঙ্কে নামানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ব্যাংক ঋণের সুদের হার এক অঙ্কে (সিঙ্গেল ডিজিট) নামিয়ে আনতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৯ জুন) সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন।

খেলাপি ঋণ কমাতে অর্থমন্ত্রীর উদ্যোগকে সময়োপযোগী আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উচ্চ হারে সুদ থাকলে শিল্প বিকশিত হবে না। এজন্য আমার সুপারিশ থাকবে যেন ব্যাংক ঋণের ওপর সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে রাখতে যথার্থ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এটি করা হলে দেশের শিল্প ও ব্যবসা খাতকে সক্ষম করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এজন্য আমাদের এই ব্যবস্থা নিতে হবে।’

মূসকের ক্ষেত্রেও বেশকিছু পরিবর্তনের সুপারিশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় পর্যায়ে একাধিক মূসক হার প্রবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। ১৫ শতাংশের নিম্নহারের উপকরণ কর রেয়াত দেওয়ার সুযোগ না থাকায় ব্যবসায়ীরা হ্রাসকৃত হারের পরিবর্তে উপকরণ কর গ্রহণ করে ১৫ শতাংশ হারে কর দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টির দাবি করেছেন। হ্রাসকৃত হারের পাশাপাশি কেউ চাইলে যেন ১৫ শতাংশ কর দিয়ে রেয়াত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে, আইনে সেই বিধান আনার প্রস্তাব করছি। দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে তাঁতশিল্পে ব্যবহৃত সুতাশিল্পের ওপর ৫ শতাংশ মূসকের পরিবর্তে প্রতিকেজি সুতায় ৪ টাকা হারে সুনির্দিষ্ট করের প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, দেশীয় শিল্পের প্রতিরক্ষণ, প্রণোদনা দিতে প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে শুল্কহার হ্রাস-বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে যাতে এর ফলে দেশীয় কাগজ ও গ্যাস উৎপাদনকারী শিল্পসহ অন্যান্য শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। দেশীয় মুদ্রণ শিল্পের প্রণোদনা দেওয়া ও বন্ড ব্যবস্থার অপব্যবহার ঠেকাতে দেশে উৎপন্ন হয় না, এমন পেপারগুলোর শুল্কহার যৌক্তিক করা হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার ১০ বছরে যে অভূতপূর্ব উন্নতি করছে তা দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা আমাদের একটি বড় সাফল্য। আমরা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে পেরেছি বলেই বাজেটে বৈদেশিক অনুদান মাত্র দশমিক ৮ শতাংশ। আমরা পরনির্ভরশীলতা কমিয়ে আত্মনির্ভরশীল হয়েছি, আত্মমর্যাদাশীল হয়েছি। উন্নয়নটা আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারছি। দেশের প্রত্যেক মানুষ এই বাজেট থেকে উপকৃত হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ অত্যন্ত সময়োপযোগী। প্রবাসী বাংলাদেশিদের অর্থ পাঠাতে ২ শতাংশ প্রণোদনার প্রস্তাবে রেমিট্যান্স পাঠানোর বর্ধিত ব্যয় লাঘব হবে। প্রবাসী কর্মীরা বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত হবেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিমা সুবিধার আওতায় আনার পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।

তিনি বলেন, তৈরি পোশাক দ্রুত বিকাশমান ও সব থেকে সম্ভাবনাময় খাত। তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে অর্থবছরে ১ শতাংশ প্রণোদনার যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এতে তৈরি পোশাক খাত আরও বিকশিত হবে। কর্মসংস্থানে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেবল শিক্ষা মন্ত্রণালয় নয়, ২৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে বাজেটে ৮৭ হাজার ৬২০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close