দেশজুড়ে

দমনমূলক বিধিগুলো সাইবার নিরাপত্তা আইনে রয়ে গেছে: এমএসএফ

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দমনমূলক বিধিগুলো সংশোধিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে রয়ে গেছে। বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৬ নম্বর অনুচ্ছেদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে তুলনায় দেখা গেছে, এ অনুচ্ছেদে একটি ছাড়া সব অপরাধের বিষয় একই আছে। শুধু একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে—অপরাধের ধরনে নয়, শাস্তির ক্ষেত্রে।

মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) দেওয়া আগস্ট মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এমএসএফ প্রতি মাসে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার প্রতিবেদন ও নিজেদের পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে মানবাধিকার প্রতিবেদন দেয়।

এমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে সব পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার দাবি উপেক্ষা করে নিজেদের মতো করে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম পরিবর্তন ও কিছু ধারা সংশোধন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’-এর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৪৩ ধারা সাইবার নিরাপত্তায় ৪২ ধারা হিসেবে একই রয়েছে। এ ধারায় পুলিশ কর্মকর্তা কোনো অফিসে তল্লাশি, কম্পিউটার বা এ-জাতীয় যেকোনো যন্ত্র জব্দ, কোনো ব্যক্তির দেহ তল্লাশি, এমনকি পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার করতে পারবে।

সাংবাদিকসহ মুক্তচিন্তার মানুষকে তাঁর মতামত প্রকাশে বাধাগ্রস্ত করা, ভয় দেখানো, হয়রানি, নির্বিচার গ্রেপ্তার ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য সাইবার নিরাপত্তা আইনটি ব্যবহার করা হতে পারে। যেহেতু অনুমোদিত আইনের অনেক ধারা জামিনযোগ্য করা হয়েছে, সেহেতু সেসব ধারায় আগের আইনে আটক ব্যক্তিরা ন্যায়সংগতভাবেই জামিন পাওয়ার অধিকার রাখে।

এমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে যেভাবে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং তাঁদের যেভাবে শারীরিকভাবে আক্রমণ, হয়রানি, হুমকি ও লাঞ্ছিত করা হচ্ছে, তা শুধু অনাকাঙ্ক্ষিতই নয়, এটা বস্তুনিষ্ঠ ও সৎ সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করার শামিল। স্বাধীন সাংবাদিকতা ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকেরা নানাভাবে হুমকি, হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যা ছিল উদ্বেগজনক। আগস্ট মাসে ৪০ সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

এমএসএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগস্ট মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পাঁচটি মামলা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে চারটিতে একজন কিশোরসহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন একজন বিএনপি কর্মী, দুজন সাধারণ যুবক ও এক কিশোর।

এমএসএফের দেওয়া প্রতিবেদনে হেফাজতে মৃত্যু, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নারী ও শিশু নির্যাতন, রাজনৈতিক সহিংসতা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, গণপিটুনিসহ নানা বিষয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবস্থা তুলে ধরা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close