করোনাদেশজুড়ে

গণভবনে বসেই দেশবাসীকে বাঁচাতে নিরন্তর চেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ গণভবন থেকেই দিন-রাত ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করে দেশের সব কিছু সামলাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাইরে বের না হলেও সরকারী এই বাসভবনে বসেই করোনাভাইরাস মোকাবেলায় নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গণভবন থেকেই সরকারের সব দাফতরিক কাজ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সভা-বৈঠক ছাড়াও দফায় দফায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করোনার ভয়াল থাবা থেকে দেশের মানুষকে রক্ষায় মাঠপর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা-জনপ্রতিনিধিদের দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় নানা নির্দেশনা। একটি মানুষও যেন কষ্ট না পায় সেজন্য গণভবনে বসেই কয়েক দফায় প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার পাশাপাশি খাদ্য-ত্রাণ ও অর্থ সহায়তা পৌঁছে দিতে দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা।

শুধু সরকারীভাবেই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ দল আওয়ামী লীগের বিশাল সাংগঠনিক শক্তিকেও কাজে লাগিয়েছেন করোনার কারণে কষ্টে থাকা মানুষকে রক্ষায়। অদৃশ্য প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে দেশে যেন কোন খাদ্য সঙ্কট সৃষ্টি না হয়, সেজন্য দেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোন রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের কৃষকের ধান কেটে ঘরে পৌঁছে দেয়ার কাজে লাগিয়ে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন। সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী-এমপি, জনপ্রতিনিধিসহ দলের সব সহযোগী-ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সারাদেশে এ পর্যন্ত ৯০ লাখ পরিবারকে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি প্রায় ৯ কোটি টাকা নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

করোনাভাইরাস বাংলাদেশে সংক্রমণ ঘটানোর পর গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। গণপরিবহনও বন্ধ করে সবাইকে ঘরে থাকতে অনুরোধ জানানো হয়। মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে বের হচ্ছেন না। বাইরে বের না হলেও গণভবন থেকেই দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন করোনা মহামারী থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে। সরকারের সব দাফতরিক কাজ ছাড়াও গণভবন থেকেই সকাল থেকে গভীর রাত অবধি মাঠপর্যায়ের খোঁজ নিচ্ছেন, প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন। সরকার পরিচালনার পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ধানম-ির নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে যুক্ত হয়ে দলের নেতাদের দিয়ে যাচ্ছেন প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা।

গণভবন থেকে বের না হওয়ার কারণ নিজেই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় অনুদান দিতে এলে শেখ হাসিনা তাদের সঙ্গে সরাসরি দেখা না করে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন। সেদিন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন- ‘করোনাভাইরাসের কারণে সরাসরি উপস্থিত থেকে আপনাদের কাছ থেকে দরিদ্র মানুষের সেবায় দেয়া অনুদান গ্রহণ করতে পারলাম না। যেহেতু আমরা নিজেই দিয়েছি মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ, সেটা ভঙ্গ করা উচিত হবে না।’

গণভবন সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই করোনাভাইরাস মোকাবেলায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল থেকে রাত অবধি রাষ্ট্রীয় ও দাফতরিক সব কাজ সামলানোর পাশাপাশি গণভবন থেকে দফায় দফায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করছেন, দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা। করোনার কারণে ভবিষ্যত অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলায় দফায় দফায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বৈঠক করছেন। বৃহস্পতিবার গণভবনে বসেই মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে গণভবন থেকেই করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম আয়োজিত আন্তর্জাতিক এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী সারাবিশ্বের সামনে করোনা মোকাবেলায় তার পাঁচ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। এর আগে ১৫ মার্চ কোভিড-১৯ ঠেকানোর লড়াইয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে সার্ক নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকেই যোগ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close