দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঘরে গরিব-দুঃখী মানুষ নয়, বসবাস করছে গরু

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ হতদরিদ্রদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরকে গোয়ালঘর বানানো হয়েছে। গরিব-দুঃখী মানুষ সরকারি এসব ঘর না পাওয়ায় এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। জমি আছে, ঘর নেই- এমন মানুষের টিনের ঘর করে দেয়ার প্রকল্প ছিল এটি। আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় এক লাখ টাকা ব্যয়ে এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এক লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঘরে গরিব-দুঃখী মানুষ নয়, বসবাস করছে গরু।

কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব ছিটকি এলাকায় আশ্রাব আলী শিকদারের বাড়িতে সরকারি বরাদ্দের এ ঘরের অপব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে সরকারি ওই ঘরে গরুর খামার দেয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গরিব না হওয়া সত্ত্বেও আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর এক লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি ঘর নিজের নামে বরাদ্দ নেন আশ্রাব আলী শিকদারের জামাতা মো. নজরুল ইসলাম।

নজরুল উপজেলার তালগাছিয়া গ্রামের মৃত মো. সোনাম উদ্দিনের ছেলে। নজরুলের নামে নিজস্ব জমি না থাকায় সরকারি ঘরটি শ্বশুরবাড়িতে নির্মাণ করেন। পাশেই নজরুলের শ্বশুরের বড় দোতলা বাড়ি রয়েছে। কাজ সমাপ্ত হলে তিন মাস আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঘর বুঝে নেন নজরুল। তবে সেই ঘরে একদিনও থাকেননি তিনি। উল্টো কয়েক দিন পরই সেই ঘরে গরুর খামার দেন। বর্তমানে সরকারি ঘরে গরু পালন করছেন তিনি। টয়লেট এবং ঘরের বেড়ার মালামাল দিয়ে শ্বশুরের ঘরের সঙ্গে আরেকটি গোয়ালঘর ও বাড়ির সামনে একটি দোকানঘর নির্মাণ করেন নজরুল। বর্তমানে নজরুল শ্বশুরবাড়ি পরিবার নিয়ে একত্রে বসবাস করছেন।

স্থানীয়রা জানান, সরকারি কর্মকর্তারা সরেজমিনে না গিয়ে যার তার নামে ঘরের তালিকা করেছেন। এতে সরকারের বিশাল একটি উদ্যোগ ভেস্তে যায়। গরিব-দুঃখী অনেক মানুষ রাস্তায় থাকলেও সরকারি ঘর ভাগ্যে জোটেনি।

এ ব্যাপারে নজরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদে ঘরের বরাদ্দ এলে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করি। আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর আমার নামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর বরাদ্দ দেয়।

কিন্তু সেই ঘরে আপনি কিংবা আপনার পরিবারের লোকজন বসবাস না করে কেন গরু পালন করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো কথা বলেননি নজরুল।

জানতে চাইলে আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান লিটন বলেন, ঘর বরাদ্দ দেয়ার ক্ষমতা আমাদের না, উপজেলা প্রশাসনের। আমরা শুধু আবেদনগুলো কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। তারা কাকে কীভাবে ঘর দিয়েছে তা আমি জানি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করে ওই ঘর মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

/আরকে

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close