প্রধান শিরোনামসাভারস্থানীয় সংবাদ

সাভারে ‘গাঙ্গচিল বাহিনী’র দলনেতা সালাউদ্দিন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাভারে অভিযান চালিয়ে দুর্ধর্ষ গাংচিল বাহিনীর প্রধান সালাউদ্দিনকে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪ এর একটি দল। এসময় তার দুই সহযোগিকেও গ্রেফতার করা হয়।

শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল তিনটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৪ এর সিনিয়র এএসপি জিয়াউর রহমান।

এর আগে শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে সাভারের আমিনবাজারের সালেহপুর এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা অস্ত্র ও মাদকসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায় নি।

র‌্যাব জানায়, ২০০০ সাল থেকে সাভার আমিন বাজার ও তার আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে উত্থান হয় গাংচিল বাহিনীর। বাহিনীটি বেশিরভাগ সময় পানিবেষ্টিত এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় এর নাম দেওয়া হয় গাংচিল বাহিনী।

২০১৭ সালে আনার মারা গেলে গাঙচিল বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয় তারই সহযোগী সালাউদ্দিন ওরফে এমপি সালাউদ্দিন। তার নেতৃত্বে আবার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু হয়। এ বাহিনী মূলত আমিন বাজার, গাবতলী, ভাকুর্তা, কাউন্দিয়া, বেড়িবাধ, কেরানীগঞ্জ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি,মাদক ব্যবসা,ডাকাতি,খুন ইত্যাদি কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে এমপি সালাউদ্দিন ও তার দুই সহযোগিকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশী পিস্তল, ১ টি ম্যাগাজিন, ২ রাউন্ড গুলি, ১৯০ গ্রাম হিরোইন, ৫০০ পিস ইয়াবা এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা ২০০২ সালে সাভার থানার ১ জন উপপরিদর্শককে কে হত্যা, ২০০৭ সালে ২ জন র‌্যাব সদস্যকে হত্যা, দিয়াবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির অস্ত্রলুট এবং আমিন বাজার এলাকায় নৌ-টহল দলের অস্ত্রলুট এর সাথে জড়িত ছিল।

র‌্যাব আরও জানায়, বাহিনীটি তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদীর বালুভর্তি ট্রলার, ইটের কার্গোতে ডাকাতি ও আমিন বাজার এলাকার শতাধিক ইটভাটা থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজি করতো। এছাড়াও এলাকার প্রভাবশালীদের টার্গেট করে গাংচিল বাহিনীর সদস্যরা মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা না দিলে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে বলে জানা যায়। চাঁদাবাজি, খুন, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই সহ তুরাগ আর বুড়িগঙ্গা নদীর দুই ধারে একক ছত্র অধিপত্য বিস্তার ছিল এই বাহিনীর প্রধান কাজ।

র‌্যাব-৪ এর সিনিয়র এএসপি জিয়াউর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা সবসময় নদীতে ও নদীর তীরবর্তী এলাকায় তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করতো এবং বেশিরভাগ সময় নদীপথে যাতাযাত করতো বলে স্বীকার করেছে। এছাড়া তাদের যাতাযাতের বাহন ছিল ডাবল ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের পর সাভার থানায় আসামিদের হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের বিরুদ্ধে পূর্বে সাভার মডেল থানায় খুন, অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মারামারির একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close