করোনাদেশজুড়ে

বগুড়ায় করোনা পজিটিভ স্বামীর সেবা করেও স্ত্রীর নেগেটিভ!

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ করোনাভাইরাস পজিটিভ নিয়ে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি রংপুরের সেই শ্রমজীবী ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পরও তাঁর স্ত্রীর শরীরে করোনার উপস্থিতি মেলেনি। ওই ব্যক্তির সঙ্গে হাসপাতালে এক সপ্তাহ ধরে অবস্থান করছিলেন স্ত্রী। কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই স্বামীর সেবাও করেছেন তিনি। এর পরও পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসার ঘটনাটিকে মিরাকল বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

বগুড়ার একমাত্র আক্রান্ত ওই ব্যক্তির শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ার পর রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শে তাঁর স্ত্রীর নমুনা সংগ্রহ করে গত রবিবার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গত সোমবার রাতে নমুনা পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসে।

মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শফিক আমিন কাজল জানান, ওই রোগীর সংস্পর্শে থাকা তাঁর স্ত্রীর শরীরে করোনার কোনো উপস্থিতি মেলেনি। এটা মিরাকেল। কারণ ওই নারী এক সপ্তাহ ধরে স্বামীর পাশে থেকে সেবা করেছেন।

আর হাসপাতালে রোগীর সংস্পর্শে আসা তাঁর মেয়ে জামাইকে রংপুরের বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রাখায় তাঁর নমুনা সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। তিনি জানান, রংপুরের সেই শ্রমজীবী ব্যক্তির করোনা পজিটিভ হলেও শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল।

করোনার সংক্রমণ শুরু হলে গত ২৯ মার্চ রাতে একটি ট্রাকে চড়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে রংপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। ট্রাকে আরো ১৫ থেকে ২০ জন ছিল। পথে জ্বরের সঙ্গে কাশি ও শ্বাসকষ্ট শুরু হলে করোনায় আক্রান্ত এ ভয়ে ওই ব্যক্তিকে ভোরে বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাস্থান বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেওয়া হয়। দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকার পর পুলিশের সহযোগিতায় একটি রিকশা ভ্যানে তাঁকে প্রথমে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুদিন রাখা হয়। পরে করোনা উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে পাঠানো হয়।

বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন। নমুনা পরীক্ষায় তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। ওই রোগীর শরীরে করোনা পজিটিভ আসার পর চিকিৎসার প্রয়োজনে সংস্পর্শে আসা বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধানসহ পাঁচ চিকিৎসক, আট নার্সসহ ১৬ জনকে গত শুক্রবার থেকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া বাসস্ট্যান্ডে ওই রোগীকে ওষুধ খাওয়াতে গিয়ে সংস্পর্শে আসা স্থানীয় এক ব্যক্তি এবং শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বগুড়া পর্যন্ত বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্স চালককেও কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। এদিকে সেই ট্রাকের এখনো কোনো হদিস মেলেনি। স্থানীয় প্রশাসন ট্রাকের সন্ধান করার পাশাপাশি ওই ভ্যানচালককে খুঁজছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর কবির বলেন, হাসপাতালের সিসিটিভি দেখে ভ্যানচালককে শনাক্তের চেষ্টা করছে পুলিশ।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close