আশুলিয়াস্থানীয় সংবাদ

আশুলিয়ায় একই পরিবারের ৩ জনের রহস্যজনক মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: আশুলিয়ায় শিশু সন্তানসহ এক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাদাইল এলাকার চারতলা বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বাড়ির মালিকের লাশ উদ্ধার করা হয়। আর স্ত্রী ও সন্তানকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তারা মারা যান তারা।

নিহতরা হলেন বাড়ির মালিক এম এ হাসান বাচ্চু (৫০) ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না বেগম (৩২) এবং তাদের পাঁচ বছরের মেয়ে জান্নাতি (৫)। এই দম্পতির আরেক ছেলে হাসপাতালে ভর্তি আছে।

পুলিশ জানায়, বাচ্চু-স্বপ্না দম্পতির ছেলে হিমেলও (১৮) ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হিমেল পাশের কক্ষে আগুন দেখে চিৎকার করে। পরে আশপাশের লোকজন দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে বাচ্চু মিয়াকে মৃত অবস্থায় পায়। এ সময় তাঁর পা আগুনে পোড়া ছিল। এ সময় স্ত্রী স্বপ্না ও মেয়ে জান্নাতি আর হিমেল জীবিত ছিল। তাদেরকে স্থানীয় এক হাসপাতালে নেওয়ার পথে স্বপ্না ও জান্নাতী মারা যান। হিমেলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে নিবিড় পরিচর্চা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী ফরিদা বেগম বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বাচ্চুর স্ত্রী স্বপ্না বেগম তার মেয়েকে নিয়ে স্কুলে থেকে বাসায় ফেরেন। দুপুরে হিমেলের চিৎকার শুনে আমি ওই বাড়িতে যাই। এ সময় বাচ্চু ও তাঁর স্ত্রীসহ দুই সন্তানকে দগ্ধ অবস্থায় দেখতে পাই। তবে আগুন লাগার কারণ আমি বুঝতে পারিনি।’

বাচ্চুর ছোট বোন হেনা বেগম বলেন, ‘আমার ভাই একটি এনজিওর মালিক। স্বপ্না বেগম তার তিন নম্বর স্ত্রী। এর আগে তিনি দুইটি বিয়ে করেছিলেন। তারা চলে গেছেন। হিমেল দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরের সন্তান। আর জান্নাতি তৃতীয় পক্ষের সন্তান।’

হেনা আরও বলেন, ‘আগুনে দগ্ধ হয়ে আমার ভাই, ভাবি ও ভাতিজি মারা গেছেন বলে আমার ধারণা। তবে ফ্লাটের ভেতরে আগুন লাগার ঘটনা রহস্যজনক।’

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা শুনেছি একই পরিবারের তিনজন মারা গেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন ঘর ভেতর থেকে আটকানো ছিল। এখন ভেতরে মূলত কী হয়েছিল তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্ত করে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’

এসআই গিয়াস উদ্দিন আরও বলেন, লাশ পুলিশ হেফাজতে আছে। আগামীকাল ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশ পাঠানো হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close