দেশজুড়ে

অন্ধকারের সঙ্গে বাড়তে থাকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অপকর্ম!

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: যাতায়েত ব্যবস্থা অসুবিধা ও বিদ্যুৎ না থাকায়, রাতের বেলা রোহিঙ্গা ক্যাম্প অনেকটা অরক্ষিত হয়ে পড়ে। আর সেই সুযোগে কিছু রোহিঙ্গা চোরাচালান ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, মিয়ানমার দ্রুত ফিরিয়ে না নিলে, রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ক্রীড়ানক হতে পারে। যে সন্ত্রাস শুধু বাংলাদেশ না, সারা বিশ্বের জন্য হুমকি। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে ২৫ আগস্ট ২০১৭-র পর ৭ লাখ ৪১ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আগের প্রায় ৩ লাখের অধিক রোহিঙ্গার সাথে তাদের ঠাঁই হয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ৩৪টি ক্যাম্পে।

নিপীড়িত এই জনগোষ্ঠীর কেউ কেউ জড়িয়ে পড়ছেন নানা অপরাধে। গত ২১ মাসে আশ্রয় শিবিরে খুন হয়েছেন ৩১ জন। অপহরণ, চাঁদাবাজি, চোরাচালানসহ, ধর্ষণ, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হযেছে ৩২৮টি। মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা বেশ কয়েকটা হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হতে দেখেছি। এরমধ্যে যারা পুরনো আছে তারা অনেকেই সশস্ত্র গ্রুপে জড়িত ছিল।’

দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও, রাতের অন্ধকারে রোহিঙ্গা শিবিরগুলো অনেকটা অরক্ষিত হয়ে পড়ে। সন্ত্রাসীরা অপকর্ম করে পাহাড়ে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এমন অবস্থায় ক্যাম্পের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুতায়ন, সিসি ক্যামেরা, কাঁটাতারের বেড়া দেয়া ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জনবল বাড়ানোর সুপারিশ করেছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, ‘ওখানে কিছু অবকাঠামোগত অসুবিধার কারণে দিনের বেলা যেভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারি, সেভাবে রাতে পারি না, কারণ বিদ্যুৎ নেই।’ পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি জনবলের কথা মাথায় রেখে এখানেই লোক বাড়ানোর।’

ঘটনা বুঝতে পেরে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ মোতায়েন, রাতে যৌথ বাহিনীর টহল, গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার মধ্যেই মূল সমাধান নিহিত।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘মিয়ানমারের রাষ্ট্রনায়ককে আমরা বলে আসছি, তারা যদি মীমাংসা না করে তাহলে যেকোন চ্যালেঞ্জ নিতে পারে। তখন তাদের থামানো আমাদের জন্য কষ্টকর হবে।’

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয় শিবিরের কোনোটি ঘিরে নেই কাঁটাতারের বেড়া। শিবিরের আয়তন প্রায় ১০ হাজার একর। অরক্ষিত শিবিরগুলোর চারদিকে এক হাজারের বেশি জঙ্গলঘেরা দুর্গম হাঁটা পথ রয়েছে। এদিকে, তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের জন্য হুমকির কারন হয়ে দাড়াঁবে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close