দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

বন্যার পানিতে ডুবে কুড়িগ্রামে ১৫ জনের মৃত্যু

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: কুড়িগ্রামে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। সেই সঙ্গে বেড়েছে দুর্ভোগ। এখনো ঘরে ফিরতে পারছে না দুর্গতরা। গত ১০ দিনে ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। আর পানিতে ডুবে মারা গেছেন ১৫ জন।

বানভাসীদের জন্য অপ্রতুল ত্রাণের কারণে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে। বিশাল এলাকাজুড়ে বন্যা হওয়ায় জনপ্রতিনিধিরা পরেছে চরম বিপাকে। তারা পৌঁছাতে পারেনি সবার কাছেই।

এ অবস্থায় কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে আসছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।

এদিকে শুক্রবার সকালে পানিতে পরে সীমা খাতুন নামে দেড় বছরের একটি শিশু মারা গেছে। সে উলিপুর পৌরসভার খাওনারদরগা গ্রামের ভাটিয়াপাড়ার সাদেক মিয়ার কন্যা। ৮নং ওয়ার্ডের পৌর কমিশনার সোহরাব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এনিয়ে গত ১০ দিনে পানিতে ডুবে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ জনে।

জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, বন্যার ফলে ৫৭টি ইউনিয়নের ৮৯৪টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পরেছে। এতে প্রায় ২ লাখ পরিবারের ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। প্রায় ২ লাখ ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০ হাজার হেক্টর।

বন্যায় ৫০০ কিলোমিটার রাস্তা, ৪০ কিলোমিটার বাঁধ ও ৪১টি ব্রিজ/কার্লভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬৪ হাজার মানুষ ১৮৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। নলকূপ ক্ষতিগস্ত হয়েছে ৯ হাজার ৭৩৪টি।

শুক্রবার সকাল থেকে হু-হু করে নেমে যাচ্ছিল বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে ১০৯ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে ৮৩ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীল পানি ব্রিজ পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যা দুর্গতদের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। ৫টি ওয়াটার ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও স্যালাইন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে বলে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. এসএম আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন।

বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতায় প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ সামর্থ অনুযায়ী ত্রাণ বিতরণ করছেন। বেসরকারি এনজিওগুলো এখনো হাত গুটিয়ে বসে আছে।

ডোনার সহায়তা না করায় তারা কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। অপরদিকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনেকে এগিয়ে আসলেও তা একেবারেই নগন্য। ফলে বানবাসীদের মধ্যে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে।

ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান জানান, সব বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন থেকে ৮শ’ মেট্রিক টন জিআর চাল, ১৩ লাখ ৫০ হাজার নগদ টাকা, ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৬ হাজার ৪২৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close