দেশজুড়ে

আদালতকে (হাইকোর্ট) বিভ্রান্ত করে জামিন নেওয়ার চেষ্টা : হাইকোর্ট

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ  র‌্যাব কর্তৃক প্রায় সাত লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার মামলার প্রধান আসামি মো. সালেহ আহমেদ ওরফে সালেহ ওরফে বার্মাইয়া সালেহ। ইয়াবা উদ্ধারের সময় তিনি পালিয়ে যান। এই মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন ওই আসামি।

জামিন আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আসামি সালেহ অপরাধ সংঘটনের সময় টেকনাফ থানার একটি মামলায় কারাগারে ছিলেন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ওই সময় আসামি জামিনে ছিলেন। একইসঙ্গে মামলার পক্ষগণ পরস্পরবিরোধী আদেশের সার্টিফায়েড কপি হাইকোর্টে দাখিল করে।

বিষয়টি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য হাইকোর্ট থেকে কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে যোগাযোগ করা হয়। এরপরই অধস্তন আদালত থেকে টেকনাফ থানার মামলায় আসামি সালেহর জামিন সংক্রান্ত আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন ওই ম্যাজিস্ট্রেট। এরপরই জাল নথি দাখিল করে আসামির জামিন আবেদন করার বিষয়টি প্রকাশ পায়। তখন হাইকোর্ট জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়ে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের নির্দেশ দেয়।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে ডিভিশন বেঞ্চের দেয়া এই আদেশের অনুলিপি মঙ্গলবার (২৮ মে) প্রকাশ পেয়েছে।

হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, মামলার সকল কাগজপত্র পর্যালোচনা করে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, বর্তমান আসামি সালেহ টেকনাফ মডেল থানার মামলার (মামলা নং-৩৯) প্রদত্ত জামিন না-মঞ্জুরের আদেশের জাল সার্টিফাইড কপি তৈরি করে এই আদালতকে (হাইকোর্ট) বিভ্রান্ত করে জামিন নেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু নথি পর্যালোচনায় এটা স্পষ্ট যে, ওই মামলায় অধস্তন আদালত আসামি সালেহকে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল জামিন মঞ্জুর করে।

কিন্তু হাইকোর্টে দাখিল করা জামিন আবেদনে ওই তারিখ পাল্টে ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, আদালত তার জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করেছে। ফলে জামিন আবেদনে এই নথি সংযুক্ত করে আসামি করেছে যে, ফেনীতে র‌্যাব কর্তৃক প্রায় সাত লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধারের সময় তিনি জেল হাজতে ছিলেন। ফলে কোনভাবেই ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। কিন্তু অধস্তন আদালতের নথি পর্যালোচনা করে আমরা এর কোন সত্যতা খুঁজে পাইনি। এ কারণে মামলার আসামি সালেহ, তদবিরকারক দিনাজপুরের বিরলের মো. এনামুল হক এবং তদবিরকারককে কাগজপত্র সরবরাহকারী গুলশানের মো. কাশেম আলীর বিরুদ্ধে জাল কাগজপত্র দাখিলের মাধ্যমে জামিন হাসিলের চেষ্টার জন্য ফৌজদারি মামলা দায়েরের জন্য হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেয়া হলো। একইসঙ্গে ৪৫ দিনের মধ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করবে।

২০১৫ সালের ২০ জুন একটি প্রাইভেটকার আটক করে তার ভেতর থেকে ৬ লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা ও নগদ সাত লাখ টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব। ওই ঘটনায় পরদিন ফেনী মডেল থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এই মামলায় কারাগার থেকে জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আসামি মো. সালেহ আহম্মেদ ওরফে সালেহ ওরফে বার্মাইয়া সালেহ।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close