আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ

আশুলিয়ায় কম্বল পেয়ে কদবানুর মুখে উষ্ণতার হাসি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শীত ও কুয়াশায় যবুথবু জনজীবন। এমন প্রচন্ড শীতে শীত বস্ত্র অভাবে জড়োসড়ো হয়ে রাত যাপন করেন অনেকেই। এমতাবস্থায় এক খানা কম্বল অনেকের যেন স্বপ্ন। এমনই এক জন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা কদবানু। একটি কম্বল অভাবে উষ্ণতাহীন রাত কাটে নির্ঘুম। আজ থেকে শীতল তার হাত-পা পরশ পাবে উষ্ণতার। একটি কম্বল পেয়ে খুশীর সীমা নেই তার।

কদবানু স্বামী হারিয়েছেন প্রায় ২০ বছর আগে। কোলে ছিল ছোট্ট শিশু মরিয়ম। তখন থেকেই নেমে পড়েন জীবন যুদ্ধে। মানুষের বাসায় কাজ করে, বাজার ঝাড়ু দিয়ে মেয়েকে বড় করে দিয়েছেন বিয়ে। এখন যেন মেয়ের সুখই তার সুখ। মেয়ের টানাপোড়েন সংসারই অভাবে জরাজীর্ণ। মেয়ের কাছে সহযোগিতা চাওয়া যেন অর্থহীন। একটি কম্বল অভাবে নির্ঘুম রাত কাটালেও মুখ ফুটে কষ্টের কথা বলার লোকও ছিল না তার। এমন সময়ে কম্বল নিয়ে হাজির ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার। কম্বল পেয়ে যেন খুশীর সীমা নেই তার।

আশুলিয়ায় কদবানুর শীতের কম্বল!

কদবানু বলেন, ‘আমি ২০ বছর ধরে কাজ করে চলেছি। এখন আশুলিয়ার গাজিরচটের শেরআলী মার্কেট বাজার ঝাড়ু দেই। মাসে আড়াই হাজার টাকা পাই। এই টাকা দিয়েই আমার মাস পার হয়। কষ্ট হলেও খাওয়া, ঘর ভাড়া, ওষুধ চললেও বাড়তি প্রয়োজনীয় কিছু কিনতে পারি না। আমার একটা কম্বল খুব দরকার ছিল। রাতে অনেক কষ্ট হতো, মোহাম্মদ আলী আমাকে একটি কম্বল দিয়েছে। রাতে আমার আর কষ্ট হবে না। আমি অনেক খুশি। তিনি আরও বলেন, আমার বয়স হয়েছে! আর কত দিন কাজ করতে পারবো জানি না, এখন যদি আমার একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড হতো তাহলেই আমার চিন্তা থাকতো না। মোহাম্মদ আলীকে বলেছি, আমাকে দিতেও চেয়েছে। মোহাম্মদ আলীর জন্য দোয়া করি, আল্লাহ তাকে হায়াৎ বাড়িয়ে দিক, ভাল রাখুক এবং সুস্থ রাখুক।

এ ব্যাপারে আশুলিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকার দরিদ্রদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৩০ টি কম্বল পাই। এই কম্বল দেওয়ার জন্য হতো দরিদ্রদের লিষ্ট করতে গিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক লোকের লিষ্ট করতে হয়েছে। বাকিদের কম্বল দেওয়ার জন্য আমি নিজ অর্থায়নে কম্বল সংগ্রহ করে আজ বিতরণ করেছি। এর মধ্যে কদবানুও ছিল। কদবানুর মত অসহায় লোকদেরই এসব কম্বল দেওয়া হয়েছে। কদবানুর আরেকটি আবদার আছে। তা হলো বয়স্ক ভাতার কার্ড। আমি সুযোগ পেলে তাকে এটাও করে দেবো।

প্রসঙ্গত, আজ ২৭ জানুয়ারি দুপুরে ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলীর নিজ অর্থায়নে আশুলিয়ার কাঠগড়া হাইস্কুল মাঠে কম্বল বিতরন করা হয়। প্রায় ৫ শতাধিক শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করে উষ্ণতা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কাঠগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি হাজী মোঃ আবুল কালাম আজাদ সরকার, স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক হাজী মোঃ তমিজউদদীন সরকার, আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. মনির হোসেন।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close