আশুলিয়াস্থানীয় সংবাদ

আশুলিয়ায় ‘কাউয়ামুক্ত যুবলীগ চাই’, প্রচারকারীরাই বিপাকে?

নিজস্ব প্রতিবেদক: সদ্য বিদায়ী যুবলীগ সভাপতি ওমর ফারুক ও ক্যাসিনো সমাট্রের রেশ যেন এখনো পিছু ছাড়েনি। তাদের এমন অধপতনের পর বেড়িয়ে আসে যুবলীগে আসা বিভিন্ন অনুপ্রবেশকারীদের নাম। আর এমন অনুপ্রবেশকারী মুক্ত করতে আশুলিয়ায় কাউয়া ও হাইব্রিডমুক্ত যুবলীগ চাই লেখা সম্বলীত ব্যানার ফেষ্টুন লাগিয়ে দেয় যুবলীগের একপক্ষ। তবে আরেকটি পক্ষ নাম ক্ষুন্ন হচ্ছে দাবী করে ব্যানার অপসারন শুরু করে। এমন ঘটনা নিয়ে দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত। একপক্ষ দাবী করেন, তথ্য আড়াল করে থানায় মামলা দায়ের করে অন্যপক্ষ। এ ঘটনায় কাউয়ামুক্ত যুবলীগ চাই প্রচারের পক্ষ নেয়া একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শনিবার (০৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আশুলিয়ায় বেরন এলাকার ছয়তলা এলাকা থেকে উজ্জল ভূইয়াকে গ্রেপ্তারকে আশুলিয়া থানা পুলিশ।

এর আগে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাত তিনটার দিকে আশুলিয়ার বেরন এলাকার ক্রিয়েশন গার্মেন্টস এর সামনে এ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বর্তমান যুবলীগকর্মীর স্ত্রী চায়না বেগম বাদি হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

সাবেক যুবলীগের কয়েক নেতা দাবী করেন, যুবলীগে সদ্য অনুপ্রবেশকারী থানা কমিটিতে নেতা বনে যাওয়ার পর হতেই দখলদারিত্বের রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসা দখল, জমি দখল, ব্যবসায়ীর পা ভেঙ্গে দেওয়াসহ কয়েক মামলার আসামী ওই প্রভাবশালী নেতা। বিভিন্ন ধরনের অরাজকতা সৃষ্টির প্রতিবাদ স্বরুপ আশুলিয়া থানার বিভিন্ন সড়ক ও মোড়ে ‘কাউয়া ও হাইব্রিড মুক্ত যুবলীগ চাই’ ব্যানার টানিয়ে দেন সাবেক যুবলীগ। এসব ব্যানার ও ফেষ্টুন বর্তমান যুবলীগের চোখে পড়লে রাতের আঁধারে প্রায় ১ হাজার ব্যানার অপসারন করে। খবর পেয়ে সাবেক যুবলীগ কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ধাওয়া করে তারা। এসময় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৭ জন আহত হয়। পরে আহদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। পরে বর্তমান যুবলীগকর্মীর স্ত্রী চায়না বেগম বাদি হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৭ থেকে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকে মামলার আসামী হতে হয়েছে বলে দাবী করে রুবেল আহমেদ জানান, আমি বিজিএমইএর সদস্য ও পোশাক কারখানার মালিক। রাত তিনটার সময় বাড়ি থেকে বের হয়ে সংঘর্ষের প্রশ্নই আসে না। হেয় করার উদ্দেশ্য ষড়যন্ত্রমুলক আমাকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। যার তীব্র নিন্দা জানাই।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহবায়ক কবির সরকার জানান, এর আগে অপপ্রচারের বিষয়ে  শিমুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আমির হোসেন জয় ও আশুলিয়া থানা যুবলীগের সদস্যরা আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। শুক্রবার রাতে সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অপপ্রচারে ব্যবহৃত ব্যানার-ফেস্টুন খুলে আনার সময় আমার কর্মীদের কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ‘কাউয়ামুক্ত ও হাইব্রিডমুক্ত যুবলীগ চাই ’ এই ব্যনারে নিচে প্রচারে ‘আশুলিয়া থানা যুবলীগ’ নাম ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ থানা যুবলীগের পক্ষ থেকে এমন কোন ব্যানার দেয়া হয়নি। ফলে এটি বির্তকিত একটি ব্যনার। এতে করে আশুলিয়া যুবলীগের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে নানা অপপ্রচার করে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, যুবলীগ কর্মীদের মারধরের ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার ভিত্তিতে উজ্জল ভূইয়া নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঘটনায় আহতদেরকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিজাউল হক দিপু জানান, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করুক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close