আশুলিয়াপ্রধান শিরোনাম

আশুলিয়ায় চুরির অপবাদে শিশু পরিবহন শ্রমিককে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আশুলিয়ায় মাত্র ৫০০ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে বাসের ভিতরে নৃশংসভাবে ১৩ বছরে শিশু ফেরদৌস হোসেনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তারই বন্ধুরা। হৃদয় নামে এক শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

খবর পেয়ে সোমবার (১৮ অক্টোবর) ভোরে নিহত শিশু ফেরদৌসের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে রোববার দিবাগত রাতে আশুলিয়ার বাইপাইলে থেমে থাকা বাসের ভিতরে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত হৃদয় ও নরুল ইসলামকে  আটক করেছে পুলিশ।

ফেরদৌস ও নুরল আশুলিয়া ক্লাসিক বাসের হেলপার ও শাহপরান হৃদয় ট্রাকের হেলপার। তারা পরস্পর বন্ধু। তাদের সবার বয়সই ১৩ থেকে ১৫ বছর। নিহত ফেরদৌস শেরপুর জেলার সদর থানার মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসচালক রইচ উদ্দিনের ছেলে। আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ বালুর মাঠ এলাকায় পরিবারের সাথে ভাড়া বাসায় থাকতো নিহত ফেরদৌস।

হৃদয়ের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ থানার চরপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ সাহেব আলীর ছেলে ও নরুল ইসলাম জয়পুরহাটের আবুল কালামের ছেলে।

পুলিশ জানায়, হৃদয় ও নরুল আশুলিয়া ক্লাসিকের বাসে ঘুমাচ্ছিলো। এসময় হৃদয়ের পকেটে থেকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা খোয়া যায়। এই ঘটনায় পাশে আশুলিয়া ক্লাসিকের অপর বাসে থাকা ফেরদৌসকে সন্দেহ করে টাকা ফেরত চায়। অপবাদ দিয়ে ফেরদৌসের পকেটে থাকা ১২০ টাকা ছিনিয়ে নিতে চায়। তবে ফেরদৌস বলে টাকা নরুল চুরি করেছে। বাকবিতন্ডার এক পযায়ে নরুল ও হৃদয় তাকে মারধর করে গলা চেপে ধরে। এসময় বাসে থাকা লাঠি দিয়ে ফেরদৌসের মাথার পিছনে আঘাত করে নরুল। গুরুতর আহত হলে ফেরদৌসকে হৃদয়, নরুল ও আরেক শিশু মিলে গন স্বাস্থ্য হাতপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়ার থানার এস আই সামিউল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে ফেরদৌসের মরদেহ উদ্ধার করে। প্রথমে হৃদয় ও নুরল ঘটনাটিকে সড়ক দুর্ঘটনা বলে হাসপাতালে চিকিৎসকদের জানায়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হলে সাভার হাইওয়ে থানাকে অবহিত করে। হাইওয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ফেরদৌসের অবস্থা সড়ক দুর্ঘটনা না, এমন সন্দেহের ভিত্তিতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। এসময় হৃদয়কে আটক করে। পরে বিকেলে নরুলকে আশুলিয়ার শ্রীকন্ডিয়া থেকে আটক করা হয়।

সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে হাইওয়ে পুলিশ যায়। আমরা নিশ্চিত হই তাদের তথ্য মতে এলাকায় কোন সড়ক দুর্ঘটনা নেই। এছাড়া আঘাতের চিহ্ন দেখে সন্দেহ হলে থানা পুলিশকে অবহিত করি।

এ ঘটনায় নিহতের পরিবার আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close