করোনাদেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

করোনার ২৪ ঘণ্টার বুলেটিনে রোগীর সংখ্যায় গোঁজামিল!

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়মিত বুলেটিনে প্রতিদিন জানানো হলেও এই সংখ্যাকে গোঁজামিল বলছেন বিশেষজ্ঞরা। একই ব্যক্তিকে গণনা করা হচ্ছে তিন থেকে চারবার। প্রতিবারই তিনি ঢুকছেন মোট আক্রান্তের তালিকায়। মূলত এপ্রিলের পর সংক্রমণ বাড়া শুরু এই গোঁজামিলের কারণে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ক্রটিপূর্ণ তথ্য দিয়ে করোনা মোকাবিলা দিন দিন আরো কঠিন হয়ে উঠবে।

সাড়ে তিন মাস ধরে প্রতিদিনই চলছে এই তথ্য প্রদান। নিয়ম করে প্রতিদিনই জানানো হয় ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত, মৃত, সুস্থ কত জনসহ দেশের করোনা পরিস্থিতির আদ্যোপান্ত। প্রশ্ন হলো- এই তথ্য কতোটা সঠিক। রাজধানীসহ সারা দেশের নমুনা সংগ্রহের বুথে প্রতিদিন নানা কাঠখড় পুড়িয়ে যারা নমুনা দিতে আসেন তাদের হাতে যে ফরমটি ধরিয়ে দেয়া হয় তাতে থাকে দুটি অপশন- নতুন কিংবা পুরাতন।

রোগীরা বলছেন, এখানে দুটো নিয়ম আছে, যেখানে নতুন আর ফলোআপ বিষয়ে ফর্মে লেখা থাকে। তবে তৃতীয়বার আর কারোর আসার সুযোগ নেই। mতবে এই তথ্য দিয়ে সঠিক সংখ্যা কিভাবে মিলবে সেই প্রশ্নের উত্তর জানে না আইউডিসিআরও। একই ব্যক্তি যদি তিন চারবারও পরীক্ষা করেন তাকে প্রতিবারেই গণনা করা হচ্ছে আলাদা ভাবে। সংবাদ বুলেটিনে যে তথ্য দেয়া হয় তাতে ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্তের সংখ্যায় কতজন পুরাতন রোগী সেই তথ্য থাকে অধরা।

আইইডিসিআর উপদেষ্টা ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, এটা ভুল রিপোর্ট না অসম্পূর্ণ বলতে পারেন। হাজার হাজার কিনা তা জানি না। এখানে কিছু তো আছে হিসাব করা দরকার। যারা একাধিকবার নমুনা পরীক্ষা করেছেন তাদের বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে। আবার সুস্থ রোগীর ক্ষেত্রেও নেই সুনির্দিষ্ট হিসাব। এপ্রিলের পর থেকেই এই গোঁজামিলের হিসাব চলছে বলে জানায় আইইডিসিআর। এমন তথ্য তাদের গবেষণারও অন্তরায় বলছে প্রতিষ্ঠানটি।

আইইডিসিআর উপদেষ্টা ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, সংক্রমণ গুরত্বপূর্ণ। সেটা আমাদের রোগীর তথ্য তুলে ধরা যাবে। যারা আইসোলেশনে ছিলেন তাদের তথ্যগুলো এপ্রিল মাসে আইইডিসিআর সংগ্রহ করেনি। আর গবেষণার জন্য আমাদের নির্ভুল তথ্য দরকার।

জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানে মহামারি মোকাবিলায় সবার আগে দরকার সঠিক তথ্য নিশ্চিত করা। সেক্ষেত্রে অবৈজ্ঞানিকভাবে তথ্য সংগ্রহের ফলে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ পিছিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, এই ধরনের অসম্পর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ তথ্য উপাত্ত দিয়ে আসলে একদিকে ভালোভাবে পরিকল্পনা করা সম্ভব না। তেমনি আমরা করোনার প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ চিকিৎসার একটা প্রতিফলন দেখছি।

তবে কারোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর কোনো শারীরিক অসুবিধা বোধ না করলে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় টেস্ট না করার পরামর্শ আইইডিসিআরের।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close