জীবন-যাপনস্বাস্থ্য

গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপে সন্তান হতে পারে বিকলাঙ্গ

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ গর্ভাবস্থায় কোনো নারী অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকলে ওই সন্তান ৩০ বছর বয়সের পৌঁছানোর আগেই সে ‘পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার’ বা ব্যক্তিত্ব বৈকল্যে আক্রান্ত হতে পারে। অর্থাৎ গর্ভবতী মায়ের মানসিক অবস্থার পরিণতি ভোগ করতে হয় সন্তানকেও। ফিনল্যান্ডে এক দল মনোবিজ্ঞানীর গবেষণায় এমন তথ্য উঠে আসে।

ওই ঝুঁকি স্বাভাবিকের তুলনায় ১০ গুণ বেশি হতে পারে জানিয়ে ওই গবেষণায় আরও বলা হয়, গর্ভাবস্থায় মাঝারি মাত্রার মানসিক চাপ দীর্ঘমেয়াদী হলেও সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

ফিনল্যান্ডে তিন হাজার ৬০০ গর্ভবতী নারী ও তাদের সন্তানদের ওপর গবেষণাটি চালানো হয়।

গর্ভাবস্থায় ওই নারীদের মানসিক চাপ নিরূপণ করা হয়। পরে তাদের সন্তান জন্ম নেওয়ার পর ওই সন্তানদের মানসিক বিকাশের ওপর নজর রাখা হয়।

মনোবিজ্ঞানীদের পরামর্শ ‘পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার’ বা ব্যক্তিত্ব বৈকল্যের বিষয়টি মাথায় রেখে গর্ভবতী নারীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে বিশেষভাবে বিবেচনায় নেওয়া উচিত বলে মনে করেন মনোবিজ্ঞানীরা।

তারা বলেন, কীভাবে সন্তানকে বড় করা হয়, পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা কী, শিশু বয়সে সে কোনো সহিংসতা বা অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হয়েছিল কিনা—এগুলোও ব্যক্তিত্বের ওপর প্রভাব ফেলে।

তবে ওই গবেষণায় জড়িত মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাবও সন্তানের ব্যক্তিত্বে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।

ব্যক্তিত্ব বৈকল্য কীঃ ‘পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার’ বা ব্যক্তিত্ব বৈকল্য এমন একটি মানসিক অবস্থা যাতে, আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের জীবন তো বটেই, অন্যের জীবনেও বড় ধরণের সঙ্কট তৈরি করে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, এরা অনর্থক এবং অতিমাত্রায় উদ্বিগ্ন হতে পারে, আবেগের ওঠানামার পেছনে কোনো যুক্তি থাকে না, অতিমাত্রায় সন্দেহ-প্রবণ হয়ে পড়ে। এমনকী অনেক সময় সমাজবিরোধী কাজেও লিপ্ত হয়ে পড়ে।

এ ধরনের মানুষ প্রায়শই মানসিক চাপে ভোগে। অনেক সময় তারা মাদক এবং মদে আসক্ত হয়ে পড়ে।

গবেষণার ধরনঃ এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে মনোবিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত সাময়িকী ‘ব্রিটিশ জার্নাল অব সাইকিয়াট্রি’তে।

গবেষণায় ৩,৬০০ গর্ভবতী নারীকে তাদের গর্ভাবস্থায় প্রত্যেক মাসে কিছু প্রশ্ন করে তাদের মানসিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করা হয়। বিশেষ করে মানসিক চাপের মাত্রা নিরূপণের চেষ্টা করা হয়।

এই নারীরা ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কি এবং আশপাশে থাকতেন। তারা ১৯৭৫ এবং ১৯৭৬ সালে সন্তানের জন্ম দেন।

ওই সন্তানদের বয়স তিরিশে পৌঁছুনোর পর দেখা যায়, তাদের ৪০ জনের মধ্যে মারাত্মক ব্যক্তিত্বের সংকট তৈরি হয়েছে। তাদের মানসিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। সূত্র: বিবিসি

#এমএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close