দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
অনুমতি নেব না, যখন প্রয়োজন সমাবেশ করব: ফখরুল
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বলেছেন, এখন থেকে সমাবেশ করার জন্য তারা আর অনুমতি নেবেন না।
রোববার(২৪ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক সমাবেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।
এর আগে রাজশাহীতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ও একই কথা বলেছিলেন। এবার মহাসচিবও সেই কথাই নেতা কর্মীদের জানিয়ে দিলেন।
পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় আগের দিন শনিবার বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে পারেনি। পরের দিনের জন্য আবার আবেদন করার পর আজ রোববার সকাল ১০টায় পুলিশ সমাবেশ করার অনুমতি দেয়।
পুলিশের অনুমতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমাদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এর পর আর অনুমতি আমরা নেব না। আমাদের সমাবেশ যখন প্রয়োজন, আমরা করব। আমরা রাজপথে নামব, এটা আমাদের শাসনতান্ত্রিক অধিকার।’
শনিবার রাজশাহীতে এক প্রতিবাদ সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকারের অনুমতি নিয়ে কখনো আন্দোলন হয় না। এখন থেকে সভা-সমাবেশ করার জন্য প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এই রাজপথ সরকারকে ইজরা দেওয়া হয়নি। রাজপথ জনগণের।
নয়াপল্টনের সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আবার অভিযোগ করেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশীভূত হয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করে রেখেছে। তিনি বলেন, আজ এই সমাবেশের একটিমাত্র লক্ষ্য, তা হচ্ছে দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য গণ-অভ্যুত্থান গড়ে তোলা। কারণ, তাঁকে অন্যায়ভাবে ২০ মাস ধরে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। তারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। তাদের আনুগত্য ভিন্ন খানে, যারা তাদের ক্ষমতায় রেখেছে। তিনি বলেন, এই সরকার সব দিক থেকে ব্যর্থ। সব প্রতিষ্ঠানকে ব্যর্থ করে দিচ্ছে। তারা আইন, প্রশাসন, বিচার বিভাগ-সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে সরকার চালাতে চায়। এই রাষ্ট্র যেন ব্যর্থ হয়, সে জন্য সুপরিকল্পিতভাবে তারা কাজ করছে। আজকে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্র হতে চলেছে।
‘এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে রক্ষা করতে’ বিএনপির মহাসচিব দলমত নির্বিশেষ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্বার গণ-আন্দোলন সৃষ্টি করার আহ্বান জানান। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন,‘আর অমুক দল জিন্দাবাদ, উত্তর-দক্ষিণ স্লোগান নয়। স্লোগান হবে একটাই, এই সরকার নিপাত যাক, এই স্লোগান দিতে হবে। সব মানুষ, সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বেলা দুটায় সমাবেশ শুরু হলেও দুপুর ১২টার পর থেকেই নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে কর্মী-সমর্থকেরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।
বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, নিতাই রায় চৌধুরী, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
/আরএম