দেশজুড়ে

চুরি করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে অবৈধভাবে সিম রেজিস্ট্রেশন

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ মানুষের কাছ থেকে তাদের অজান্তে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে অবৈধভাবে সিম রেজিস্ট্রেশন করে একটিভ করা সিম মার্কেটে বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। বিভিন্ন কৌশলে মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্মার্ট কাড ব্যবহার করে এবং কৌশলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে এসব সিম বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে আসছিল চক্রটি।

এমন একটি জালিয়াতি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

তাদের কাছ থেকে দেড়শ একটিভ সিম, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট গ্রহণের একটি ক্যাবল ও তিনটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ফেরদৌস সরোয়ার রবিন রবি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির লোকাল এজেন্ট একে খান টেলিকম লিমিটেডে সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন কৌশলে মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্মার্ট কাড ব্যবহার করে এবং কৌশলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে রবি মোবাইল অপারেটরের সিম রেজিস্ট্রেশন করে একটিভ সিম বাজারে বিক্রি করে আসছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান বলেন, জালিয়াতির মাধ্যমে রবি মোবাইল অপারেটরের সিম রেজিস্ট্রেশন করে বাজারে একটিভ সিম বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। এ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেড় শতাধিক বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

এসএম মেহেদী হাসান জানান, এ চক্রটি মানুষের অজান্তে কৌশলে তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে অবৈধভাবে সিম রেজিস্ট্রেশন করে আসছিল। এ চক্রটি এখন পর্যন্ত দেড় শতাধিক সিম রেজিস্ট্রেশন করেছে। তাদের সঙ্গে আর যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।

তিনি বলেন, আমরা তদন্ত করে দেখবো অবৈধভাবে রেজিস্ট্রেশন করা এসব সিম কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্যবহার হচ্ছে কী না।

কেউ চাইলে বা কোথাও অপ্রয়োজনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট না দিতে সাধারণ মানুষকে অনুরোধ জানান পুলিশ কর্মকর্তা এসএম মেহেদী হাসান।

গ্রেফতার চারজন হলেন- ফেরদৌস সরোয়ার রবিন (১৮), মিনহাজুল ইসলাম (২৩), মিশু আহমেদ (৩০) এবং জাবেদ ইকবাল (৩০)। এদের মধ্যে ফেরদৌস সরোয়ার রবিন এ চক্রের মূলহোতা এবং অন্যরা তার সহযোগী বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, বুধবার বিকেলে বাকলিয়া থানার বলিরহাট এলাকার ব্যবসায়ী মুহাম্মদ ইসমাইল নামে এক ভুক্তভোগী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন তার জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ৩০টি সিম রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। কিন্তু ইসমাইল ব্যবহার করছিলেন মাত্র চারটি সিম। ইসমাইলের অভিযোগ অনুসন্ধানে জানা যায়- রবি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির লোকাল এজেন্ট একে খান টেলিকম লিমিটেডে সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ ফেরদৌস সরোয়ার রবিন বিভিন্ন সময় ইসমাইলের কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেন।

ওসি নেজাম বলেন, ফেরদৌস সরোয়ার রবিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি এসব বিষয় স্বীকার করেন। রবিন ইসমাইলের মতো আরও সাত ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে সিম রেজিস্ট্রেশন করেছে বলে স্বীকার করেন। পরে রবিনের দেওয়া তথ্যে বুধবার রাতে কালামিয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিনহাজুল ইসলাম ও মিশু আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে রেয়াজউদ্দিন বাজার থেকে জাবেদ ইকবালকে গ্রেফতার করা হয়।

এ ঘটনায় বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান ওসি নেজাম উদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (চকবাজার জোন) মুহাম্মদ রাইসুল ইসলামসহ অভিযান পরিচালনাকারী টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close