দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

ছাত্রলীগের নব্য সভাপতি জয় আসলে কে?

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ  ছাত্রলীগের নতুন – দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে যখন ছাত্রলীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছিল তখনও রাজপথে সক্রিয় ছিলেন আল নাহিয়ান খান জয়। সদালাপী, হাস্যোজ্জ্বল ও কর্মীবান্ধব এ নেতা ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্বের কারণে ছাত্র-শিক্ষকসহ সব মহলে হয়েছেন জনপ্রিয়। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আইন বিষয়ক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন, তিনি বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি। এর আগে তিনি শহীদ সার্জেট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হওয়ার পরই হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বও পান তিনি।

জয়ের দাদা মোশাররফ হোসেন খান ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। ছোট বেলায় দাদার কোলে বসেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা শুনেছেন। চাচা আবদুল হালিম খান ও বাবা আবদুল আলীম খানের কাছে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের অনেক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা শুনে বড় হয়েছেন। তারা সবাই পরামর্শ দিয়েছিলেন, রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলে অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর আদর্শই যেন লালন করি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু।

স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময় থেকেই তার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিল। মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেছেন তার দাদা মোশাররফ হোসেন খান। তিনি ভোলার মনপুরা-তজুমদ্দিন থানার রেভিনিউ সার্কেল অফিসার ছিলেন। বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী এ ব্যক্তি স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে বাবুগঞ্জ, উজিরপুর, গৌরনদী ও মুলাদী থানার মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের একজন অন্যতম অর্থদাতা ছিলেন।

জয়ের বাবা আবদুল আলীম খান বিশিষ্ট সমাজ সেবক, বরিশাল বিভাগের গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৩ সাল থেকে উপ-বৃত্তি প্রদান করে আসছেন। তিনি আশির দশকে ঢাকার বৃহত্তর বরিশাল ছাত্র সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের সাবেক নেতাও ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগ স্কুল কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। চাচা মৃত আবদুল হালিম খানও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি আগরপুর ইউনিয়ন পরিষদ (বর্তমান জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন) থেকে চারবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন, থানা আ.লীগের আমৃত্যু সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে তিনি পটুয়াখালী ও বরিশাল উত্তর মহকুমার মুজিব বাহিনীর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।

বাবা-দাদা-চাচার মতো আল নাহিয়ান খান জয়ের ফুফুও সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বড় ফুফু মৃত কহিনুর বেগম। তিনি একজন শিক্ষানুরাগী, বাবুগঞ্জ ও মুলাদী থানার মহিলা আওয়ামী লীগের বিশিষ্ট সংগঠক ছিলেন। তার স্বামী মরহুম মোসলেম উদ্দীন খান মুলাদী মাহামুদজান পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং মেজ ফুফু বিলকিস বেগম গোলেনুর আওয়ামী লীগের মনোনীত বাবুগঞ্জ থানা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন। বাবুগঞ্জ থানা মহিলা আ.লীগের বিশিষ্ট সংগঠকও ছিলেন তিনি। তবে বিশেষভাবে একটা কথা উল্লেখ করার মতো। তা হলো, স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নবম সেক্টরের কন্ট্রোল রুম ছিল আমাদের ঘরে। কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে ছিলেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্ত মরহুম ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক।

বিএনপি-জামায়াতের তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা হরতাল ও অবরোধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বোমাবাজদের ধরিয়ে দেয়ার কারণে পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে ডিএমপি পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া, শেরে বাংলা স্মৃতি পদক ২০১৪ পাওয়ার সুযোগ হয়েছে। এছাড়া স্বাধীনতা স্মৃতি পদক ২০১৫ পাওয়ার সৌভাগ্যও হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close