প্রধান শিরোনামশিক্ষা-সাহিত্য

জাবিতে এসেছে অতিথিরা::

হিমেল, নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতি  বছর অতিথি পাখির জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। তাই আগে ভাগেই প্রকৃতির প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় এখানে। যেহেতু শীত মৌসুমিতে অতিথি পাখিরা আসে। তাই এই লোকালয়ে শীত যেন অতিথিদের বরণে আগে ভাগেই এসে হাজির।

শীতের প্রভাব, নিরাপদ আবাসস্থল ও খাদ্যের সন্ধানে প্রতি বছরের ন্যায় এবারে হাজারো পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করেছে পাখিদের অভয়রাণ্য হিসেবে খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এ বছর অক্টোবর শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে বলেছে  জানান প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান।

তিনি জানান, এ সময় অতিথি পাখি ক্যাম্পাসে আসার প্রধান কারণ হচ্ছে দেশের বাইরে থেকে এ সময় প্রচুর পরিমানে অতিথি পাখি হাওড় অঞ্চলগুলোতে আসতে থাকে। যার কারণে খাদ্যের সংকট পড়ে। তাছাড়া হাওড় অঞ্চলে পাখি শিকার হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভূগে পাখিরা। তাই খাবার ও নিরাপত্তার কারণে দেশীয় পাখিগুলো শীতের শুরুতেই আমাদের ক্যাম্পাসে আসতে থাকে।

অক্টোবরের শেষের দিকে প্রায় ১হাজার পাখি এসেছে ক্যাম্পাসে। তার মধ্যে ৯৭% ছোট সরালি। ছোট সরালি অধিকাংশ হাওড় অঞ্চল বিশেষ করে সিলেট, হবিগঞ্জ, সনামগঞ্জ, নেত্রকোণা  ও মেঘালয়  থেকে এসেছে। মার্চ মাসের দিকে গরমের আভাস পেলেই এরা চলে যাবে। বাকি ৩% পাখি দেশের বাইরে থেকে বিশেষ করে সাইবেরিয়া অঞ্চল থেকে আসে। এর মধ্যে অধিকাংশ বড় সরালি জাতীয় পাখি। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক অতিথি
পাখি  আসে এ ক্যাম্পাসে।

সাধারণ দুই ধরনের পাখির আগমন ঘটে এ ক্যাম্পাসে। এক ধরনের পাখি ডাঙ্গায় বা শুকনো স্থানে বা ডালে বসে বিশ্রাম নেয়। আরেক ধরনের পাখি পানিতে থাকে ও বিশ্রাম  নেয়। এদের বেশির ভাগই হাঁস জাতীয়।

বর্তমানে ক্যাম্পাসে যে পাখিগুলো দেখা যাচ্ছে তার অধিকাংশ ল্যাঞ্জা হাঁস, খুনতে হাঁস। হাঁস জাতীয় ১০ প্রজাতির পাখি আমাদের ক্যাম্পাসে দেখা গেছে। তবে প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ প্রজাতির হাঁস জাতীয় পাখি দেখা যায়। তার মধ্যে ল্যাঞ্জাহাঁস, বালি হাঁস ও ভূতিহাঁস প্রতি বছর আসে। তবে নকতাহাঁস সর্বশেষ ২০০৮ সালে দেখা যায়।

বর্তমানে প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল সংলগ্ন লেক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশে ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারের লেকটি লিজমুক্ত রয়েছে। যার কারণে অধিকাংশ পাখি এই লেকগুলোতে দেখা যাচ্ছে।

প্রতি বারের মত এবারো পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে  জানুয়ারী মাসের দিকে পাখি মেলা আয়োজন করা হবে বলে জানান কতৃপক্ষ।

পাখি সংরক্ষণের বিষয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং বাইরে থেকে যারা অতিথি পাখি দেখতে আসে তাদের সবাইকে সতেচন হতে হবে। যাতে করে অতিথি পাখি রিবক্তবোধ বা লোকগুলো থেকে উড়ে না যায়। আশা করছি এ বছর বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি পরিযায়ী আমাদের ক্যাম্পাসে আসবে। একই সঙ্গে বিগত বছরগুলোর মত এবারো বিশ্ববিদ্যালয় পাখি সংরক্ষনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমরা আশাবাদি।

/এনএএইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close