প্রধান শিরোনামবিশেষ প্রতিবেদন

‘জীবিত না হউক, অন্তত নিথর দেহটার খোঁজ দিন’

রিফাত মেহেদী, বিশেষ প্রতিনিধি: তপ্ত রোদে দুচোখের দৃষ্টি সর্বনাশী তুরাগ নদীতে। একবার মহাসড়কে দাড়িয়ে, কখনো নদীর পাড়ে বসে। একটু পর পর উদ্ধারকর্মীর পাশে। ভাই, কোন খবর আছে? হতাশা নিয়ে আবার অপেক্ষা। এমন ভাবেই গত দুইদিন কাটছে নাসিম ও সিরাজুল ইসলামের। তারা দুজনই তুরাগে নিখোঁজ ট্যাক্সি চালক জিয়াউর রহমানের স্বজন।

আমরা তো উদ্ধার অভিযান বুঝিনা, আমরা জানি না কিভাবে ডুবুরি কাজ করবে? আমরা চাই জিয়াউরের অন্তত নিথর দেহটা উদ্ধার করা হউক। তার পথ চেয়ে বসে আছে অবুঝ দুই সন্তান। তপ্ত রোদে, পরিশ্রান্ত দেহে একই আক্ষেপ বারবার করে ফিরছেন জিয়াউরের স্বজনেরা।

ভিডিও দেখুন:

অন্তত নিথর দেহটা পেতে চান, নিখোঁজ চালকের স্বজনরা

অন্তত নিথর দেহটা পেতে চান, নিখোঁজ চালকের স্বজনরা

Posted by ঢাকা অর্থনীতি on Wednesday, 24 July 2019

দ্রুত খুঁজে দিতে পারবে এই আশ্বাসে স্থানীয়দেরও আমরা অনুরোধ করেছি সাহায্য করতে। তারা কয়েকজন নেমেও গিয়েছিল কিন্তু প্রশাসনের চাপে তারাও উঠে আসতে বাধ্য হয়। বলছিলেন, জিয়াউরের চাচা শ্বশুর সিরাজুল ইসলাম।

আমিনবাজারের তুরাগ নদে নিখোজ ট্যাক্সিক্যাব উদ্ধার হয়নি প্রায় তিনদিনেও। এতে করে বাড়ছে স্বজনদের আহাজারি ও ক্ষোভ। জীবিত জিয়াউরকে ফিরে পাওয়ার আশা তো উবে গেছে আগেই৷ এখন নিথর দেহই যেন বাড়ি ফেরার শেষ প্রত্যাশা।

এদিকে বাবার পথ চেয়ে বসে আছে অবুঝ দুই কন্যা শিশু ও হতভাগ্য স্ত্রী। সর্বনাশের খবর পেলেও আসতে পারছেন না। যখন থেকে এই খবর শুনেছে, তখন থেকেই কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি জিয়াউরের নিখোঁজের ঘটনা পরিবার মানতে পারছে না।

ঘটনাস্থলে এসেই বুঝতে পারেন আর বোধহয় জীবিত দেখা মিলবেনা জিয়াউরের। ঘটনার প্রেক্ষাপট, উদ্ধার অভিযান, পুলিশ, মিডিয়ার চাপে বাড়িতে কি খবর দিবে হিসেব মিলিয়ে উঠতে পারেনা জিয়াউরের চাচা শ্বশুর সিরাজুল ইসলাম এবং শ্যালক নাসিম ।

ক্রমে ক্রমে দিন গড়িয়ে রাত, রাত গড়িয়ে দিন৷ তবুও নিখোজ ট্যাক্সি সহ জিয়াউরের নেই কোন হদিস। সময় যত বাড়ছে তাকে খুজে পাওয়ার আশাও তত ক্ষীণ হচ্ছে।

তবে উদ্ধার কাজ নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে স্বজনদের। জিয়াউরের শ্যালক নাসিম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, উদ্ধার কাজ অবহেলিত হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যদিও স্বজনদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে এই বলে যে, তাদের কাজে কোন গাফিলতি নেই। তবুও শান্ত হচ্ছেনা তাদের মন।

স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। অভিযান শুরুর পর ফায়ার সার্ভিসের সাথে যুক্ত হয়েছে নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল। তারাও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

গত রোববার (২১ জুলাই) রাত ৮ টার দিকে আমিনবাজার সালেহপুর ব্রীজের ঠিক আগেই একটি বাসের সাথে ধাক্কা লেগে রাস্তা থেকে ছিটকে তুরাগ নদে গিয়ে পড়ে একটি ট্যাক্সি ক্যাব। পরদিন সোমবার(২২জুলাই) মহাসড়কে থাকা পুলিশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ এবং নিজেদের জিপিআরএস সিস্টেম থেকে নিখোজ ট্যাক্সিসহ ড্রাইভারের পরিচয় নিশ্চিত করে আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট পরিচালিত ট্রাস্ট ট্যাক্সি।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close