আমদানি-রপ্তানীপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য

ট্যানারির দূষণের শঙ্কা সাভারে

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: কোরবানি উপলক্ষে সাভারের চামড়া শিল্পনগরের বর্জ্য পরিশোধনাগার প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে কোরবানির সময় ট্যানারিগুলোতে যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপাদিত হয়, তা অপসারণের সক্ষমতা নেই সিইটিপির।

সাভারের চামড়া শিল্পনগর ঘিরে এবারও দূষণের আশঙ্কা করছেন সেখানকার ট্যানারিশিল্প মালিকেরা। তাঁরা বলছেন, কোরবানির সময়ে ট্যানারিগুলোতে যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপাদিত হয়, তা অপসারণের সক্ষমতা নেই কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগারের (সিইটিপি)। এ কারণে এবারও দূষণের শঙ্কায় রয়েছেন শিল্পমালিকেরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হাজারীবাগে থাকাকালে ট্যানারিগুলো প্রতিদিন প্রায় ২১ হাজার ৬০০ ঘনমিটার তরল বর্জ্য সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলত। এ ছাড়া চামড়ার উচ্ছিষ্ট বেড়িবাঁধের পাশে, খালে, জলাধারে ও রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হতো। এ সমস্যা সমাধানে শিল্প মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সাভারের হেমায়েতপুরে তৈরি করে চামড়া শিল্পনগর। বর্তমানে শিল্পনগরে উৎপাদনে আছে প্রায় ১৪০টি ট্যানারি।

সাভার চামড়া শিল্পনগরের ট্যানারিগুলোতে উৎপাদিত তরল বর্জ্য পরিশোধন করে নদীতে ফেলার কথা। এ জন্য প্রায় ৫৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সিইটিপি করা হয়েছে। আর সিইটিপির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ওয়েস্টেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট কোম্পানি। কোম্পানিটি তরল বর্জ্য পরিশোধনের পাশাপাশি কঠিন বর্জ্যও সিইটিপির পার্শ্ববর্তী ডাম্পিং ইয়ার্ড বা আস্তাকুঁড়ে ফেলে।

এ ছাড়া ট্যানারিগুলোর তরল বর্জ্য ভূ–অভ্যন্তরের নালার মধ্য দিয়ে সিইটিপিতে গিয়ে পরিশোধিত হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, সিইটিপির প্ল্যান্টগুলো কোরবানির বর্জ্য পরিশোধনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ সিইটিপির ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার ঘনমিটার। তবে কোরবানির মৌসুমে এ শিল্পনগরে গড়ে ৩০ হাজার ঘনমিটার তরল বর্জ্য উৎপাদিত হয়। এ কারণে কোরবানির সময় বাড়তি বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হয় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চামড়া শিল্পনগরের সিইটিপি এখনো পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। সর্বশেষ গত ৬ জুন বর্জ্যের নমুনা পরীক্ষা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তাতে দেখা গেছে, টোটাল ডিজলভড সলিড (টিডিএস) ও টোটাল ক্রোমিয়াম—এ দুই মানদণ্ডে সিইটিপি এখনো কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছাতে পারেনি।

এ বিষয়ে ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্টেস ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘আমরা এবার কোনোভাবেই সিইটিপির ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত তরল বর্জ্য উৎপাদিত হতে দেব না। ইতিমধ্যে এ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছি।’ কঠিন বর্জ্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা একটা হিসাব করেই গর্ত খনন করেছি। আশা করছি, ওই স্থানে উৎপাদিত বর্জ্যের সংকুলান হয়ে যাবে।’

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close