দেশজুড়ে

‘নাম বললে কিন্তু খবর আছে’

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ স্টাম্প, পাইপ ও লাঠি দিয়ে রাতভর পিটিয়ে গুরুতর আহত করে আইসিইউতে পাঠানো জাহিদ হোসেন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেনকে এবার আইসিইউতে গিয়ে ছাত্রলীগের কয়েকজন হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের যারা মারধর করেছেন, তাদের নাম না বলতে নিষেধ করে এ হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ শনিবার দুপুর ১টায় এই হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন জাহিদ হোসেন ওয়াকিলের বড় ভাই।

শনিবার দুপুরে ছাত্রলীগের তিন-চারজনের একটি গ্রুপ আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা ওয়াকিলের শয্যা কক্ষে যান। সংবাদ মাধ্যমের হাতে আসা ভিডিওতে ওয়াকিলের পাশে অবস্থান নেওয়া একজনকে শনাক্ত করা গেছে।

ওই ব্যক্তির নাম সাজু দাশ। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৬০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। দুপুর একটায় আইসিইউতে গিয়ে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নো কমেন্ট।’

একই সময়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা সাকিব হোসেনকেও একটি গ্রুপ গিয়ে হুমকি দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাকিব এবং ওয়াকিলের দুজন আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘দুজনকেই ওই ছাত্রলীগের কর্মীরা বলেন, ‘খুব আরামে আছ। একটু মারধর করেছি, সেটি নিয়ে নাটক শুরু করেছ। নাম বললে কিন্তু খবর আছে।’

ওয়াকিলের বড় ভাই বলেন, ‘এই বিষয়ে আইসিইউতে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখবেন বলেছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘আইসিইউতে গিয়ে হুমকির বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যাতে কেউ আর ডিস্টার্ব করতে না পারে, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনো পর্যন্ত আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি।’

এদিকে ছাত্র নিপীড়ন বন্ধে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) সকল শিক্ষকদের নিয়ে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আগে থেকে গঠিত অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটিকে ঘটনাটি তদন্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এ জন্য কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

চমেক অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে কেন বারবার এমন ঘটনা ঘটছে তা উদ্‌ঘাটন করা দরকার। ছাত্ররা কিছু স্বীকার করছে না। বিষয়টি তদন্ত করে বের করতে হবে। আর ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, এ জন্য আমি সকল শিক্ষকদের ইনভলভ করতে চাচ্ছি। এ জন্য আজকে সবাইকে নিয়ে বসেছি। আগে থেকে উপাধ্যক্ষের নেতৃত্বে ৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবে।’

উল্লেখ্য গত বুধবার গভীর রাতে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসের বিভিন্ন কক্ষ থেকে শিবির সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন—চমেকের ৬২ তম ব্যাচের ছাত্র এম এ রাইয়ান, মোবাশ্বির হোসাইন শুভ্র, জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেন। আহতদের মধ্যে জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেনকে চমেক হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রতে (আইসিইউতে) ভর্তি করা হয়েছে।

এ ছাড়া আহত এমএ রাইয়ান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং শুভ্র নারায়ণগঞ্জে একজন অর্থোপেডিকস বিভাগের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close