করোনাদেশজুড়ে

কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন হানিফ পরিবহনের প্রতিষ্ঠাতা

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সড়ক পরিবহন প্রতিষ্ঠান হানিফ এন্টারপ্রাইজের প্রতিষ্ঠাতা জয়নাল আবেদিন মারা গেছেন। ৮৫ বছর বয়সে কোভিড আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশ সেপশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (১১ নভেম্বর) রাত ৮ টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন।

অধ্যবসায়ী ও সফল মানুষটি সবার কাছে ‘ফাদার অব ট্রান্সপোর্টেশন’ হিসেবে পরিচিত। সংগ্রামী মানুষটি একটি ট্রাক থেকে এখন ১২শ’ বাসের মালিক। তিনি হানিফ এন্টারপ্রাইজের স্বপ্নদ্রষ্টা।

জীবনের শুরুটা ছিল বেশ বন্ধুর। সেটি কাটিয়ে উঠেছেন অক্লান্ত পরিশ্রম আর কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে। দেশের পরিবহন খাতে তার ব্যাপক অবদান। এলাকার মানুষ তাকে ডাকেন জয়নাল মহাজন নামে।

জয়নাল আবেদীনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকার সাভারে। মাত্র একটি ট্রাক নিয়ে পথ চলা শুরু। পরবর্তীতে শুরু কোচ ব্যবসা। গড়ে তোলেন পরিবহন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‌‘হানিফ এন্টারপ্রাইজ’। ছোট ছেলে হানিফের নামেই গড়ে তুলেছিলেন হানিফ এন্টারপ্রাইজ। তারপর আর পেছনে ফিরতে হয়নি। পেট্রোল পাম্প, সিএনজি স্টেশন, ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং, কোল্ডস্টোরেজ, পানীয় ও প্রকাশনা ব্যবসাও গড়ে তুলেছেন এ স্বপ্নবাজ মানুষ।

হানিফ এন্টারপ্রাইজের কারিগর জয়নাল আবেদীন সবসময়ই গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলেছেন। তার সাফল্যের সেই দিনগুলোর অজানা গল্প জানিয়েছেন সাদামাটাভাবে।

সূত্র মতে, তার জন্ম সাভারের আমিনবাজারের হিজলা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম ব্যবসায়ী পরিবারে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি পঞ্চম। বাবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকার সময় আমদানি রফতানির ব্যবসা করতেন। বিশেষ করে তিনি ধান-চাল ও চামড়ার সফল ব্যবসায়ী ছিলেন।

পড়াশোনায় মনোযোগী না হওয়ায় তরুণ বয়সেই ব্যবসা শুরু করেন জয়নাল আবেদিন। সে সময় এতো পরিবহন তো ছিল না, এমনকি দূরপাল্লার রাস্তাও ছিল কম। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর। দেশকে নতুন করে পুনর্গঠনের ডাক পড়লো। মানিক মিয়া এভিনিউ, সংসদ ভবন এলাকায় তখন বোরো ক্ষেত। ওই ক্ষেতে সাব কন্ট্রাক্টে শুরু করেছিলেন মাটি ফেলার কাজ। মাত্র ১৪ হাজার টাকায় তিন টনি একটি পেট্রোল ট্রাক কিনে ছিলেন। সঙ্গে কয়েকটি ট্রাক ভাড়াও করলেন। পরে ট্রাকটি বিক্রি করে বেডফোর্ডের পাঁচ টনি ডিজেল ট্রাক কিনলেন।

সূত্র জানায়, বর্তমানে হানিফ এন্টারপ্রাইজের কারণে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

এরপর কাজ পেলেন ফেনীর মাতা মুহুরু নদীর বাঁধ নির্মাণে। সেখানেও সাব কন্ট্রাক্ট। মাটি ফেলার জন্যে ঠিকাদার তাকে অগ্রীম ১০ লাখ টাকা দিলেন। তা দিয়ে কিনলেন দুটি হিনো কোচ। ছোট ছেলে হানিফের নামে যাত্রা শুরু করলো ‘হানিফ এন্টাপ্রাইজ’। প্রথমে ঢাকা-বগুড়া রুটে। পরবর্তীতে একটির সাফল্য ধরে আরো একটি একটি করে রুট বাড়তে থাকলো। এভাবেই গত চার দশকে বহরে যুক্ত হয়েছে ১২শ’ বাস।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close