দেশজুড়ে

বাংলাদেশের সবচেয়ে স্মার্ট চোর এরা

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে স্মার্ট চোর এরা! দিনের আলোতে চোখের পলকে বড় বড় চুরি সংঘটিত করে সটকে পড়ে এরা। রাঙামাটি থেকে চট্রগ্রাম, কুমিল্লা থেকে যশোর- ভৌগলিক সীমারেখা নেই এদের অপারেশন প্লানে। যেখানে সুবিধা, যেখানে বড় সাফল্য- সেখানেই এরা হাজির। নির্বিঘ্নে চুরি করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে এরা ওস্তাদ।

তবে এবার বাধ সেজেছে তথ্যপ্রযুক্তি। সবার নজর এড়িয়ে একের পর এক সাফল্য পেলেও প্রযুক্তির নজর এড়াতে পারেনি তারা। তাই যশোর থেকে চুরি করে নির্বিঘ্নে শত শত কিলোমিটার দূরের নিজ বাড়িতে পৌঁছেও নিস্তার মেলেনি তাদের। যশোরের গোয়েন্দা পুলিশ তাদের আটক করেছে তিন জেলা থেকে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এদের হাজির করা হয় সাংবাদিকদের সামনে।

আটক চোরচক্রের সদস্যরা হলেন, রাঙামাটির কাউখালি উপজেলার রাঙ্গীপাড়া গ্রামের আব্দুল আউয়ালের ছেলে আব্দুর রহিম বাদশা (২৬), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কুটি গ্রামের মোশারফের ছেলে সোহেল ওরফে মোটা সোহেল (২৬), কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ইউসুফ নগর গ্রামের তারু মিয়ার ছেলে উজ্জ্বল (১৭) ও একই গ্রামের গিয়াসউদ্দিনের ছেলে সুমন (১৬)।

আটক চোরেরা স্বীকার করেছে, তিনদিন ধরে জুলেয়ার্সের মালিক অমিত রায় আনন্দকে ছায়ার মতো অনুসরণের পর সময় নির্ধারণ করে তারা নয় মিনিটেই চুরি করে পালিয়ে গেছে।

পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রাব্বানী। তিনি জানান, কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বালাকোট গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে আবদুল স্মার্ট এই চোর দলের গ্যাং লিডার। এই আবদুলের নেতৃত্বে দেশজুড়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি দল। এরা সিলেট, কুমিল্লা, চট্রগ্রাম ও নরসিংদীতে চুরি করেছে। চুরির সব পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে কোনো একটি দলকে নির্বাচন করে অপারেশনের জন্য। আবদুল-চক্র সবসময়ই দিনের বেলা প্রকাশ্যস্থানে খুব অল্প সময়ের মধ্যে চুরি করে থাকে। চুরির জন্য বেছে নেয় সোনার দোকান, বিকাশ এজেন্ট, মোবাইলসহ নগদ টাকার কারবার আছে এমন সব প্রতিষ্ঠানকে। দোকানের আকার বড় হলে লোকচক্ষুকে আড়াল করতে ত্রিপল, আর ছোট হলে শাল চাদর ব্যবহার করা হয়। যশোরের সোনার দোকান চুরির সময় বৃষ্টিভেজা দুপুরে জুয়েলারির সামনে এমনভাবে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেয়া ও ভাজ করার অভিনয় করা হয়, যাতে কেউ বুঝতে পারেনি ভিতরের সব টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। দোকানের ৪টি তালা ভাঙার জন্য দেড় মিনিট সময় ব্যয় করে তারা। এজন্য কুমিল্লার একটি হার্ডওয়ার দোকান থেকে ২৪ ইঞ্চি কাটার সংগ্রহ করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, গত ২৭ জুনে কোতোয়ালী মডেল থানার কাছে প্রিয়াঙ্গন জুয়েলার্সে বিকেল ৩টা হতে ৪টার মধ্যে চুরিটি সংঘটিত হয়। দোকান মালিক তালা লাগিয়ে বাসায় খাবারের জন্য গেলে, এই সময়টাকেই কাজে লাগায় তারা। ওই চুরির ঘটনায় খোয়া যায় ৩৭ ভরি সোনাসহ নগদ আড়াই লাখ টাকা। পরে এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close