প্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়ে

বাংলাদেশে হামলার পরিকল্পনাকারী প্রবাসী অস্ট্রেলিয়ায় দণ্ডিত

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: বাংলাদেশে হামলার পরিকল্পনাকারী আইএস সমর্থক নওরোজ রায়েদ আমিন নামে ওই যুবককে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার আদালত।

সোমবার নিউ সাউথ ওয়েলস সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পিটার গার্লিং এ রায় দেন। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী আইএস সমর্থক নওরোজ রায়েদ আমিন বাংলাদেশে হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন।

অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম সিডনি মর্নিং হেরাল্ড জানিয়েছে, নওরোজ রায়েদ আমিন নামে ৩০ বছর বয়সী ওই যুবক পাঁচ বছর আগে ছদ্মবেশের উপকরণ, ট্যাকটিক্যাল বুট, বোমা তৈরির বইসহ সিডনি বিমানবন্দরে আটক হন। তিনি ওই সময় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের কট্টর সমর্থক ছিলেন।

খবরে বলা হয়, ২০১৫ সালের মে থেকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে দুই বাংলাদেশির সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথোপকথনের সময় আইএস সমর্থনের কথা জানান নওরোজ। ২০১৫ সালের আগস্টে তিনি বাংলাদেশের এক লোককে বলেছিলেন, ‘রান্না শেখার জন্য দেশে আসতে হবে তাকে। ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের পথে রওয়ানাও দিয়েছিলেন নওরোজ। কিন্তু সিডনি বিমানবন্দরে আটক হন তিনি। এসময় তার লাগেজ তল্লাশি করে বেশ কয়েকটি ইউএসবি পেনড্রাইভ, তিন জোড়া ক্যামোফ্ল্যাজ ট্রাউজার (সাধারণত সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করেন), মার্শাল আর্ট গ্লাভস, অস্ট্রেলীয় ডলার ও বাংলাদেশি টাকা পাওয়া যায়।

ইউএসবি পেনড্রাইভগুলো পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাতে আইএসের একটি অনলাইন ম্যাগাজিনের ১০টি সংখ্যা, যার একটিতে ছিল সামরিক ঘাঁটিতে হামলা ও গাড়িতে বোমা লাগানোর ছক। ছিল বোমা তৈরির কৌশল বিষয়ক ২৪১ পৃষ্ঠার একটি বইয়ের অনলাইন সংস্করণ। এছাড়া আত্মঘাতী বোমা হামলা ও দণ্ড কার্যকরের বেশ কিছু ভিডিও ছিল পেনড্রাইভগুলোতে।

নওরোজ আমিন দাবি করেন, এসব জিনিস বাংলাদেশে তার চাচাতো ভাইকে শেখাতে এবং তাকে আইএসে যোগদান থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে আনছিলেন। তবে এ ঘটনার পর নওরোজকে আর উড়োজাহাজে উঠতে দেয়া হয়নি এবং পরে তার পাসপোর্টও বাতিল করা হয়।

সেই ঘটনার প্রায় দুই বছর পর ২০১৮ সালের জুন মাসে সিডনির ইংলেবার্ন শহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নওরোজকে। চলতি বছর নিজের দোষ স্বীকার করেছেন তিনি।

তবে প্রসিকিউটরদের দাবি, নওরোজ আমিন বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া অথবা সিরিয়াতে হামলার পরিকল্পনা করছিলেন। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নওরোজ। তার দাবি, তিনি কেবল বাংলাদেশেই হামলা করতে চেয়েছিলেন।

বিচারপতি গার্লিং বলেন, আমি তার বক্তব্যে সন্তুষ্ট, অপরাধের সময় তার বয়স অপেক্ষাকৃত কম ছিল এবং সে এখন আইএস মতাদর্শ ত্যাগ করেছে।

এ কারণে নওরোজকে পাঁচ বছর চার মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন অস্ট্রেলীয় আদালত। এর মধ্যে চার বছর কোনো প্যারোল পাবেন না তিনি। অবশ্য এরই মধ্যে বেশ কয়েক বছর কারাভোগ হয়ে গেছে তার। সেই হিসাবে ২০২২ সালের জুন মাসেই প্যারোলে মুক্তি পেতে পারেন এ যুবক।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close