ব্যাংক-বীমাশিল্প-বানিজ্য

বিমা কোম্পানিগুলোর তিনটির বেশি ব্যাংক হিসাব নয়

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ প্রিমিয়ামের টাকা জমা করার জন্য নন-লাইফ অর্থাৎ সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলো তিনটির বেশি ব্যাংক হিসাব সংরক্ষণ করতে পারবে না। অর্থাৎ বিমা কোম্পানিগুলো যেকোনো তিনটি আলাদা তফসিলি ব্যাংকে একটি করে হিসাব সংরক্ষণ করতে পারবে। কোনো কোম্পানি যদি এরই মধ্যে তিনটির বেশি ব্যাংক হিসাব সংরক্ষণ করে থাকে, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বাড়তি হিসাবগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সম্প্রতি নন-লাইফ বিমা কোম্পানিগুলোর উদ্দেশে প্রজ্ঞাপন জারি করে এমন নির্দেশনা দিয়েছে। বিমা গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণ, বিমা কোম্পানিতে সুশাসন আনা তথা সুদৃঢ় অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্যই এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

আইডিআরএ বলেছে, প্রয়োজন অনুযায়ী বিমা কোম্পানিগুলো মূলধন সংরক্ষণের জন্য একটি এবং অন্যান্য আয় জমা করার জন্য একটি ব্যাংক হিসাব সংরক্ষণ করতে পারবে। অন্যদিকে দাবি পরিশোধ ও ব্যবস্থাপনা খরচের জন্য একটি ব্যাংক হিসাব রাখতে হবে।

বিমা দাবি, কমিশন ও বেতন-ভাতার টাকা কোনো অবস্থাতেই নগদে পরিশোধ করা যাবে না বলেও সতর্ক করে দিয়েছে আইডিআরএ। সংস্থাটি আরও বলেছে, সব লেনদেন ক্রসড চেকে হতে হবে। তবে দাপ্তরিক প্রয়োজনে কোম্পানিগুলো ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদে তুলতে পারবে। কোম্পানির পর্ষদ সভার সম্মানী এবং এ–বিষয়ক অন্যান্য খরচের টাকাও নগদে করা যাবে।

আইডিআরএ এ–ও জানিয়েছে, কোনো ব্যাংকে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) খোলার ক্ষেত্রে বিমা কোম্পানিগুলোকে আইডিআরএর অনুমোদন নিতে হবে না, তবে অন্য যেকোনো বিষয়ে ব্যাংক হিসাব খোলার ক্ষেত্রে অনুমোদন নিতে হবে। ব্যাংক হিসাব সংরক্ষণের এই নির্দেশনা অনুযায়ী বিমা কোম্পানিগুলোকে আগামী ১২ আগস্টের মধ্যে আইডিআরএর কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

বিমা কোম্পানিগুলোর সিইওদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ‘বিমা খাতের বিষফোড়া’ খ্যাত অতিরিক্ত কমিশন প্রথা বন্ধের জন্যই ব্যাংক হিসাব সংরক্ষণের নতুন নির্দেশনা দিয়েছে আইডিআরএ। বিলুপ্ত বীমা অধিদপ্তরের সময়ে অতিরিক্ত কমিশন প্রথা যেমন ছিল, ২০১১ সালে নতুনভাবে শুরু হওয়া বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) আমলেও তা রয়েছে।

আইডিআরএর চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী সংবাদমাধ্যমে বলেন, অযৌক্তিক কমিশন প্রথা দূর করতেই ব্যাংক হিসাব সংরক্ষণের নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ‘বহু বছর থেকেই এই দুষ্ট কমিশনপ্রথার শিকার বিমা খাত। আমরা এবার কঠোর। নির্দেশনা কেউ না মানলে লাইসেন্স বাতিলের পদক্ষেপ পর্যন্ত নেব।’

কোম্পানিগুলোকে আগে মানাতে পারেননি, এখন কীভাবে মানাবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে আইডিআরএর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এবার বিআইএ এবং বিআইএফের সমর্থন পাওয়া গেছে। আইডিআরএর নতুন নির্দেশনা বাস্তবায়নে তারা এককাট্টা বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’

বিআইএ সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, আইডিআরএর এটি খুব ভালো উদ্যোগ। এখন সংস্থাটির উচিত হবে কাউকে ছাড় না দেওয়া।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close