দেশজুড়েব্যাংক-বীমা

ব্যাংক বন্ধ হলে ১ লাখ টাকা পাওয়ার তথ্য গুজব

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখার পর সেই প্রতিষ্ঠান অবসায়ন বা বন্ধ হলে সব আমানতকারী সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পাবেন বলে যে তথ্য ছড়িয়েছে সেটাকে গুজব বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।

তিনি জানান, কোনো ব্যাংক যদি বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে মোট ১৮০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতকারীকে এক লাখ টাকা দেবে। প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে আমানতকারীরা আবেদন করবেন। পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ‘আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিল’ থেকে এক লাখ টাকা করে দেয়া হবে। বাকি টাকা পরবর্তী সময়ে অবসায়ন বা বন্ধ হওয়া ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীকে আনুপাতিক হারে পরিশোধ করা হবে।

বর্তমানে বীমা তহবিলে সংরক্ষিত টাকার পরিমাণ অনুযায়ী ৯২ শতাংশ আমানতকারীদের হিসাব সম্পূর্ণ বীমাকৃত। মাত্র ৮ শতাংশ আমানতকারী ঝুঁকিতে রয়েছে। এক লাখ টাকা করে দিলে প্রায় ৯২ শতাংশ আমানতকারীর আমানত পরিশোধ হয়ে যাবে বলে দাবি করেন তিনি।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, এর বাইরেও ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ৭৪ ধারা অনুসারে কোনো তফসিলি ব্যাংক অবসায়িত হলে উক্ত ব্যাংকের সম্পদ থেকে সব আমানতকারীদের পাওনা পরিশোধের সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে।

তবে এক্ষেত্রে বড় অংকের আমানতকারীদের আমানতের পুরো টাকা কতদিনের মধ্যে পান জানতে চাইলে তিনি বলেন: বাকি টাকা বন্ধ হওয়া ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে ও বিতরণ করা ঋণ উত্তোলন করে পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে।

সিরাজুল ইসলাম জানান, ১৯৮৪ সালে আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় যে আইন করা হয় সেখানে আমানতের অর্থ ফেরত দেওয়ার পরিমাণ ছিল ৬০ হাজার টাকা। পরে ২০০০ সালে আমানত বীমা আইন প্রবর্তন করে এক লাখ টাকা করা হয়। বর্তমানে এই আইনে আমানতকারীরা এক লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে। তবে সংশোধিত আইনে এটি বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিলে’ ৮ হাজার ৭৪৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা জমা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরও জানান, এতদিন শুধুমাত্র ব্যাংকের আমানতকারীরা বীমা সুবিধা পেতেন। কিন্তু নতুন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীদের এখানে যুক্ত করা হয়েছে। এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব আমানতকারীরা এই সুবিধা পাবেন। তবে প্রথমে ব্যক্তি গ্রাহকের টাকা এবং পর্যায়ক্রমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। সবশেষে টাকা পাবেন প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ।

এ সময় তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আর কোনো ব্যাংক বন্ধ হবে না। অন্যান্য দেশে ব্যাংক দেউলিয়া হলেও বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত এই ঝুঁকি নেই।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close