দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

যশোরে স্ত্রী হত্যার দায়ে দুই স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ যশোরে ২০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করেছিলন দুইজন। ঘটনা দুটি পৃথক। একই আদালতে একইদিন পৃথক রায়ে ওই দুইজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হল- যশোর সদরের আগরাইল গ্রামের কাওছার মোল্লার ছেলে জাহিদুল ইসলাম ও কেশবপুরের বেতীখোলা গ্রামের মৃত আতশ গাজীর ছেলে মোমিন গাজী। তারা দুইজনই পলাতক রয়েছে।

বৃহস্পতিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ (জেলা জজ) আদালতের বিচারক টিএম মুসা পৃথক রায়ে এই দণ্ডাদেশ দেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলা দুইটির রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি এম ইদ্রিস আলী।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০০ সালে কেশবপুরের বেতীখোলা গ্রামের মোমিন গাজীর সঙ্গে একই গ্রামের মোবারক সরদারের মেয়ে মনোয়ারা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুক দাবি করলে মোমিনকে ২০ হাজার টাকা দেয়া দেয়া হয়।

বাকি ২০ হাজার টাকার জন্য মান্নান প্রায়ই মনোয়ারাকে মারপিট করত। ২০০৬ সালের ২০ মে মোমিন ও তার মা মনোয়ারাকে বেদম মারপিট করে হত্যা করে।

এ ব্যাপারে নিহতের ভাই আকবর আলী বাদী হয়ে নিহতের স্বামী মোমিনসহ দুইজনকে আসামি করে আদালতে যৌতুকের দাবিতে হত্যার অভিযোগে মামলা করেন। পরে মামলাটি কেশবপুর থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হওয়ার পর তদন্ত করে ওই দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সিরাজুল ইসলাম আদালতে চার্জশিট জমা দেন।

এ মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে নিহতের স্বামী মোমিনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও বিশ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন। হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক অপর আসামিকে খালাস দিয়েছেন। অপরদিকে, ১৯৯৫ সালে আসামি জাহিদুল ইসলাম বাঘারপাড়ার কুটারাকান্দি গ্রামের আবদুস সামাদের মেয়ে তাসলিমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জাহিদুল ইসলামসহ তার পরিবারের লোকজন তাসলিমা খাতুনের কাছ ২০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে নির্যাতন করত। মেয়ের সংসারের সুখের কথা চিন্তা করে ১১ হাজার টাকা ও সংসারের মালামাল দেয়া হয়।

২০০১ সালের ২৯ আগস্ট তাসলিমার মা তার শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর তাসলিমাকে মারপিট করে বাড়ির পাশের কাঁঠাল গাছে ঝুলিয়ে হত্যা করে।

এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। পরে ময়নাতদন্তে হত্যার অভিযোগ পাওয়ায় নিহতের মা জাহানারা খাতুন বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যতন দমন আদালতে একটি মামলা করেন। আদালতে তাসলিমা খাতুন হত্যা মামলাটি কোতোয়ালি থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হয়।

এ মামলার তদন্ত শেষে এসআই সোহরাব হোসেন পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। নিহতের স্বামী জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন।

এ মামলার অপর চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক তাদের খালাস দিয়েছেন।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close