দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

রূপ পাল্টেছে বিমানবন্দর স্টেশনের

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ যানজট থেকে মুক্তি ও সাশ্রয়ী খরচে ভ্রমণ করতে অনেকেরই প্রথম পছন্দ রেল। আর এই রেলসেবা আরো আরামদায়ক ও যাত্রীবান্ধব করতে আধুনিক রূপে সেজেছে রাজধানীর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন।

করোনার কারণে প্রায় সাড়ে পাঁচ মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর খুলে দেয়া হয়েছে ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন। বন্ধের এ সময়ে বিমানবন্দর স্টেশনটিতে প্ল্যাটফর্ম উঁচু করাসহ বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। যাত্রীরা যেন সহজে ট্রেনে উঠতে পারেন সেজন্য প্ল্যাটফর্ম উঁচু করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, আগে যাত্রীদের কারপার্কিংয়ের স্থলে রেন্টেকার, ট্যক্সি ক্যাব এবং ভাসমান দোকান ছিলো অনেক। প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ১ হাজার থেকে ১৬শ’ টাকা চাঁদা আদায় করা হতো। স্টেশনের বাথরুম ও বিশ্রামাগার ছিলো ব্যবহার অযোগ্য। কিন্তু নতুন করে বিমান বন্দর স্টেশনের উন্নয়ন কাজ করায় সেই চিত্র এখন অতীত। দেখে চেনা যায় না এটা বিমানবন্দর রেল স্টেশন।

সম্প্রতি সরেজমিনে বিমানবন্দর স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, রেলগাড়ি এসে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াতেই সাধারণ যাত্রীরা নির্বিঘ্নে ট্রেন উঠতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আগে প্ল্যাটফর্ম নিচু থাকায় ট্রেনে উঠতে যাত্রীদের কষ্ট হতো। কিন্তু প্ল্যাটফর্ম উঁচু করায় এখন আর এ ধরনের কোনো সমস্যা নেই। পুরাতন বিমানবন্দর আর বর্তমান বিমানবন্দরের চিত্র একেবারেই আলাদা। যেখানে সেখানে ভাসমান দোকান ও কার পার্কিংয়ের জায়গায় বেদখল হওয়ায় যাত্রীদের চলাচল ও ট্রেনে উঠা-নামায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হতো। কিন্তু এখন যাত্রীদের কোনো সমস্যাই হচ্ছে না। ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হলেও হাঁটাচলার প্রচুর জায়গা পাচ্ছেন।

আগে প্রায় ১২ থেকে ১৫টি হোটেল রেস্তোরাঁ ছিলো। দুপুরের পর থেকে দোকান পাট ও ভাসমান খাবারের দোকানে পুরো এলাকা সয়লাব হয়ে যেতো। বিমানবন্দর রেলস্টেশনের পূর্বপাশে এবং পশ্চিম পাশের রেলওয়ের পুরো খালি জায়গা বেদখল হয়েছিলো। এছাড়া হাজি ক্যাম্পের দিকে যাতায়াতে রাস্তার উপরে রেল লাইনের দুইপাশে ফলের দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের শতাধিক ভাসমান দোকান ছিলো। কিন্তু এখন এসব জায়গা খালি পড়ে আছে। ভাসমান দোকান নেই বললেই চলে।

পুরোপরিবার নিয়ে রাজশাহী যাওয়ার জন্য ধূমকেতু সিল্কসিটি ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন আব্দুর রহিম নামের একজন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা। জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি স্টেশন যদি এরূপ আধুনিকায়ন হয়, তা কিছুটা হলেও সড়ক পরিবহনের ওপর চাপ কমাতে সক্ষম হবে।

তিনি বলেন, আগে বিমানবন্দর স্টেশনে এসে আমরা অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু এখন আর সেই সব ঝামেলা নেই। শান্তিতে বাড়ি যেতে পারবো। এখন নিরাপত্তার বিষয়টিও উন্নত হয়েছে। আগে ভিড় বেশি থাকায় পকেটমার ও ছিনতাইকারীদের উৎপাত বেশি ছিলো কিন্তু এখন এ বিষয়টি নেই।

জানতে চাইলে স্টেশন মাস্টার মরন চন্দ্র বাবু বলেন, যাত্রীদের সুবিধার জন্য বিমানবন্দর স্টেশনকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগে ট্রেনে উঠতে যাত্রীদের অনেক কষ্ট হতো। বড় বড় ব্যাগ নিয়ে অনেক কষ্ট করে ট্রেনে উঠতেন। কিন্তু এখন আর যাত্রীদের কষ্ট করতে হয় না। খুব সহজেই তারা ট্রেনে উঠতে পারেন।

ভাসমান দোকান ও কারপার্কিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিমান বন্দর স্টেশনে এখন আর কোনো ভাসমান দোকান নেই। এছড়াও পার্কিংয়ের জায়গাও ফাঁকা। যাত্রীরা তাদের গাড়ি নিয়ে নির্বিঘ্নে আসতে পারেন কোনো সমস্যা নেই।

জিআরপির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে যোগদানের পর থেকেই প্রতিনিয়ত চুরি-ছিনতাই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছি।

তিনি বলেন, গত রোববার মোবাইলসহ খোরশেদ আলম নামের একজন চোরকে আটক করে ঢাকা রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্ল্যাটফর্ম এলাকায় কোন হকার নেই। এছাড়া পার্কিং এলাকায় নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযানের ফলে পার্কিং ফাঁকা রয়েছে যার ফলে মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে যাতায়াত করতে পারছে।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close