প্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়ে

রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞের তথ্য-প্রমাণ জাতিসংঘকে দিতে ফেসবুকের সম্মতি

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনে দেশটির সেনাবাহিনীর চালানো হত্যাযজ্ঞের তথ্য-প্রমাণ জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কর্তৃপক্ষকে দিয়ে সহায়তা করছে ফেসবুক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির প্রতিনিধি মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওই কর্মকর্তা জানান, রোহিঙ্গা নিধনের যে তথ্য ফেসবুকের কাছে রয়েছে, তদন্তের স্বার্থে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ টিমকে দিয়ে সহায়তা করবে এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।

এর আগে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার তথ্য প্রমাণের তদন্তে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কোনোভাবেই সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ করেন মিয়ানমারে নিয়োজিত জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কর্তৃপক্ষের প্রধান নিকোলাস কুমজিয়ান। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ’ সংঘটিতের আলামত হাজিরের প্রতিশ্রুতি দিয়েও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তা পালন করছে না জানান তিনি।

জাতিসংঘের তদন্তকারীরা জানান, মিয়ানমারের সহিংসতা বাড়িয়ে তুলতে ফেসবুক মূল ভূমিকা পালন করে। ২০১৮ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীরি সংশ্লিষ্ট এমন ১৮টি অ্যাকাউন্ট, এবং ৫২টি পৃষ্ঠা সরিয়ে নেয়া হয়। যদিও তাদের কাছে তথ্যগুলো সংরক্ষণ আছে বলেও জানান।

তবে মিয়ানমারের স্বাধীন তদন্তকারীর সংস্থা রয়র্টাসকে জানিয়েছে, ফেসবুক ‘গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ’ সংক্রান্ত কোন তথ্যপ্রমাণ শেয়ার করেনি। ইতোমধ্যে তথ্য প্রমাণের প্রথম চালান তারা হাতে পেয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর দায়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে অভিযুক্ত মিয়ানমার। জাতিসংঘের তদন্তকারীদের অভিযোগ, ঘটনার সময় বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে ফেসবুক অন্যতম ভূমিকা রেখেছে। আর সেসব বিদ্বেষমূলক বক্তব্যই সহিংস পরিস্থিতিকে আরও জোরালো করে তুলেছে।

রোহিঙ্গা নিধনকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া। যদিও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যার তথ্য গাম্বিয়াকে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। গণহত্যা চালানোর দিনগুলোতে মিয়ানমারের কর্মকর্তারা কবে, কীভাবে, কার সাথে যোগাযোগ করেছেন, সে বিষয়ে ফেসবুকের কাছ থেকে তথ্য চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের শরণাপন্ন হয় গাম্বিয়া। আদালতে ফেসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয়, গাম্বিয়ার অনুরোধ রাখলে সেটা মার্কিন আইনের পরিপন্থী হবে। আইন অনুযায়ী ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এভাবে কোনও ব্যবহারকারীর তথ্য দেয়া যায় না বলে দাবি করে প্রতিষ্ঠানটি।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে হত্যা, গুম, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জীবন বাঁচাতে নতুন করে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close