দেশজুড়েশিক্ষা-সাহিত্য

সন্ধানীর বাৎসরিক সম্মেলন নিয়ে ধোঁয়াশা, মহামারীর মধ্যেই সভার প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের আয়োজনে এবং সন্ধানী এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ইউনিটের সহযোগিতায় সন্ধানী ৩৯তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন আগামী ৪-৫ ডিসেম্বর, ২০২০ইং তারিখে সিলেটে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে সন্ধানী তাদের বাৎসরিক সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে সন্ধানীর সারা বাংলাদেশের সকল ইউনিট থেকে সদস্যরা অংশগ্রহণ করে। এ সম্মেলনের মাধ্যমেই সন্ধানীর কেন্দ্রীয় কমিটি এবং সকল ইউনিট কমিটি গঠন করা হয়ে থাকে। তাই এ সম্মেলন সন্ধানীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানায় সন্ধানীর বর্তমান কমিটির সভাপতি তানভীর হাসান ইকবাল।

কেন্দ্রীয় সভাপতি ইকবাল আরো বলেন, কিছুদিন আগে যখন করোনা কিছুটা শান্ত হয়েছিল তখন আমরা সম্মেলন করার সিধান্ত নিয়েছিলাম কিন্তু এখন করোনা পরিস্থিতি আবার খারাপের দিকে যাচ্ছে। হাতে সময় খুব অল্প তাই আমরা সভার ডাকও দিতে পারছিনা। সভা ব্যতীত এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত জানানো যাচ্ছেনা।

২০২০ সালে সম্মেলনের পূর্ব নির্ধারিত স্থান ছিল সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ। প্রতি বছর এপ্রিল-মে মাসের মধ্যেই সম্মেলন সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু এ বছর মহামারী করোনার প্রভাবে পিছিয়ে যায় সম্মেলন। কেন্দ্রীয় কমিটির একাংশ এবং উপদেষ্টাদের একাংশ করোনাকালীন সময়ে সন্ধানীর এ সম্মেলনের বিপক্ষে অবস্থান করা সত্ত্বেও এখন সম্মেলন কোনভাবেই স্থগিত করতে চায়না এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ইউনিট।

সাধারণত যে ইউনিট এ সম্মেলনের আয়োজন করে পরের কমিটিতে তাদের মধ্য থেকেই কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্টের পদের জন্য অগ্রাধিকার থাকে। কেন্দ্রীয় সভাপতির পদের মোহে সকল ইউনিটই চেষ্টা করে অত্যন্ত সফলতার সাথে এ সম্মেলনের আয়োজন সম্পন্ন করতে।

কিন্তু অভিযোগ রয়েছে উক্ত আয়োজনের জন্যে করোনা মহামারী অবস্থায় স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কোনো প্রকার অনুমতি নেওয়া হয়নি।

প্রতিবছর সম্মেলনগুলো মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে হলেও এবার তারা হাসপাতালের বাহিরে একটি রিসোর্টে উক্ত অনুষ্ঠানটি আয়োজন করতে যাচ্ছে।

এ বছর এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ইউনিটকে সম্মেলন আয়োজনের আগে প্রশাসন থেকে অনুমতি নেয়ার শর্ত জুড়ে দেয় সন্ধানীর কেন্দ্রীয় কমিটি। তবে সিভিল সার্জন থেকে কোন অনুমতি না নিয়েই এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ইউনিট সম্মেলন আয়োজন করতে চাচ্ছে বলে জানায় কেন্দ্রীয় পরিষদ।

এ বিষয়ে তানভীর হাসান ইকবাল বলেন, আমাদের কাছে ওসমানী মেডিকেল কলেজ ইউনিট জানিয়েছে তারা অনুমতি পেয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত কোন নথি কেন্দ্রীয় পরিষদকে দেখায়নি তারা। আমরা দেখতে চাইলে বলে পরে দেখানো হবে।

সিলেটের সিভিল সার্জন বুধবার(০২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ডা: প্রেমানন্দ মন্ডল জানান, করোনার মধ্যে এ জাতীয় কোন আয়োজনের জন্য আমার সাথে কেউ কোন ধরণের যোগাযোগ করেনি। বা আমি কাউকে অনুমতি প্রদানও করিনি।

সন্ধানী এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ইউনিটের সভাপতি লুতফর রহমান মিলন বলেন, আমরা এবারের আয়োজন অনেক রেস্ট্রিক্টেড করে দিয়েছি। ১৫০ জনের বেশি এবারে কেউ অংশ নিতে পারবেনা। আমরা সিলেটের একটি রিসোর্টে যেখানে ৫০০ জনের ধারণক্ষমতা সেখানে ১৫০ জন নিয়ে সম্মেলন করবো সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে। আমরা এখনো সিভিল সার্জনের অনুমতি পাইনি। আগামীকাল আবার যাবো। এছাড়া ডিসি সাহেবের কাছ থেকে আমরা মৌখিক অনুমতি পেয়েছি। অনুমতি সংক্রান্ত কোন কাগজ আমাদের কাছে নেই। তবে এখন তো স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনেক প্রোগ্রামই হচ্ছে।

সম্মেলনে অরাজকতা বা মারামারি বা অপ্রীতিকর ঘটনার শংকা নিয়ে প্রশ্ন তুললে ওসমানী মেডিকেল সভাপতি বলে, এজন্যেই রিসোর্টে আয়োজন করা যাতে বাইরের কেউ চাইলেই প্রবেশ না করতে পারে।

তবে সন্ধানীর উপদেষ্টাদের একাংশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, রিসোর্টে অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে তার দায়ভার কে নেবে? মেডিকেল কলেজের ভেতর হলে বিষয়টা অধ্যক্ষের আওতাধীন থাকতো।

এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ ময়নুল হক বলেন, আমাদের এখানে করোনা রোগী আছে। আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসে এ আয়োজন করার অনুমতি আমরা দেইনি। কিন্তু আমাকে তারা জানিয়েছে এবারের আয়োজন লিমিটেড(সংকুচিত) হবে। ১০০-১৫০ জন এবারের সম্মেলনে অংশ নিবে। রিসোর্টের আয়তন বেশ বড়। যদি তারা রিসোর্টে আয়োজন করে তাহলে সেখানে ১৫০ জন নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজন সম্পন্ন করা সম্ভব। আমি দাওয়াত পেয়েছি, যাব কি যাবোনা এখন ঠিক করিনি।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close