দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে জোরপূর্বক বিয়ে!

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ যশোরের চৌগাছার ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে অজ্ঞান করে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক তৃতীয় স্ত্রী বানানোর অভিযোগ উঠেছে।

মেয়েটির পরিবার জানায়, চৌগাছা ছারা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির এই ছাত্রীকে অপহরণ করে ঝিনাইদহে নিয়ে জোরপূর্বক মোহন নামে এক বিবাহিত যুবকের সাথে বিয়ে দেন তিব্বত হোসেন নামে এক ঘটক।

মেয়েটির পরিবার চৌগাছা থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ শনিবার (৩১ সেপ্টেম্বর) রাতে মেয়েটিকে মোহনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। মেয়েটি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় শনিবার রাতেই তাকে চৌগাছা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রাতেই মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা না নিয়ে পারিবারিকভাবে মিটিয়ে ফেলতে পরামর্শ দেয় বলে অভিযোগ করেছেন মেয়েটির পিতা। তবে আজ রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চৌগাছা থানার এএসআই নজরুল ইসলাম জানান, ওই ভিকটিমের পরিবারকে থানায় মামলা করার জন্য আসতে বলা হয়েছে। মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তারা এখন থানায় রয়েছে।

মেয়েটির পিতা বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। দিন মজুরি করে চলি। চৌগাছা বাজারের একটি পাড়ায় বসবাস করি। গত ২৮ আগস্ট আমরা বাড়িতে কেউ ছিলাম না। এসময় আমার মেয়ে বাড়ির বাইরে বের হলে তাকে অপহরণ করে ঘটক তিব্বত ও তার এক ভায়রা।

মেয়েটির পিতা বলেন, ‘এর আগের দিন ওই ঘটক আমাকে মোহন নামের ব্যক্তির সাথে মেয়ে বিয়ে দেয়ার জন্য চাপাচাপি করে। আমি তাকে বলি, আমার মেয়ে ক্লাস সিক্সে পড়ে, এখনো ছোট। তাকে আমি বিয়ে দেব না। এ নিয়ে ঘটকের সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়। ঘটক তিব্বত আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়।

মেয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে পিতা আরও বলেন, ‘মেয়েকে অজ্ঞান অবস্থায় একটি গাড়িতে করে ঝিনাইদহ নিয়ে একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। গাড়ির মধ্যে তার জ্ঞান ফিরলে তার হাত-মুখ চেপে ধরেন দুজন। মেয়েটির অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাসপাতালের ডাক্তার তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখতে নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই ঘটক ও তার ভায়রা মেয়েটিকে হাসপাতাল থেকে অসুস্থ অবস্থায় নিয়ে এসে কোন একটি কাজী অফিসে মোহন (৩৫) নামের ওই ব্যক্তির সাথে বিয়ে দেয়। মোহনের আগের দুই স্ত্রীর একজন অসুস্থ, অন্যজন আত্মহত্যা করে মারা যায়। বিয়ের পর মোহন মেয়েটিকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলার আদমপুর গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা থানায় অভিযোগ দেয়ার পরও পুলিশ আসামিদের আটক করেনি। পরে শনিবার রাতে উপজেলার কিসমতখানপুর থেকে আমার মেয়েকে উদ্ধার করে রাতে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে চৌগাছা থানা পুলিশ। আমরা রাতেই মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা না নিয়ে পারিবারিক ভাবে মীমাংসা করার পরামর্শ দেয়।’

চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মেয়েটিকে শনিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সুরাইয়া পারভীন মানসিক ডিপ্রেশনের (এইচসিআর) রোগী হিসেবে তাকে ভর্তি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close