দেশজুড়ে

স্ত্রীকে গণধর্ষণ, অতঃপর স্বামীকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখল দুর্বৃত্তরা

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ জামালপুরে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ এবং তার স্বামীকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রামকৃষ্ণপুর গ্রামের নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ জানায়, একই গ্রামের ছানোয়ার হোসেন (৩৫), শাওন (২৫) ও রফিজ উদ্দিন (৪০) দীর্ঘদিন ধরে তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এ বিষয়ে তিনি তার স্বামী ও শ্বশুরকে জানালে ওই তিনজন তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়।

এরপর গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে তিনি ঘর থেকে বাইরে বের হলে আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা ছানোয়ার, শাওন ও রফিজ তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে ছানোয়ারের বাড়ির পেছনে একটি জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে।

নির্যাতিতা বলেন, এরপর তাকে ছানোয়ারের বাড়িতে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে তার স্বামী সেখানে গেলে তাকেও আটকে রেখে মারধর করে ওই তিন যুবক। একপর্যায়ে তারা তার স্বামীকে হত্যা করে তাদের বাড়ির পাশে একটি গাছে ঝুলিয়ে রেখে বলে সে আত্মহত্যা করেছে।

তিনি বলেন, পরদিন সকালে পুলিশ গিয়ে ছানোয়ারের বাড়ির একটি কক্ষ থেকে বন্দি অবস্থায় তাকে আর গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার স্বামীর লাশ উদ্ধার করে।

গৃহবধূ বলেন, জামালপুর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. গোলজার আলমকে বিষয়টি জানালে পুলিশ এবিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পরবর্তীতে পুলিশ একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে ময়নাতদন্তের জন্য ওই তার লাশ জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

তিন দিন ঘুরলেও পুলিশ ধর্ষণ মামলা না নেওয়ায় সোমবার রাতে ওই গৃহবধূ বাধ্য হয়ে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান। সাংবাদিকরা তাকে চিকিৎসার জন্য জামালপুর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন। বর্তমানে ওই গৃহবধূ জামালপুরে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ছানোয়ার ও রফিজ এবং তাদের বাড়ির সদস্যরা পলাতক রয়েছে।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাসানুল বারী জানান, ওই গৃহবধূর শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও ধর্ষণের প্রাথমিক আলামত পাওয়া গেছে। তবে ডাক্তারি পরীক্ষার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান জানায়, ওই নারীর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে নাকি এটি আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে জানা যাবে। সোমবার রাতে নির্যাতিতা ওই গৃহবধূ ছানোয়ার, শাওন ও রফিজের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করার পর রাতেই শাওনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য দুই আসামিকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ওসির দাবি, সোমবার রাতে সাংবাদিকরা জানানোর আগে ধর্ষণের বিষয়ে তার কাছে কোনো অভিযোগ করা হয়নি।

এঘটনায় এসআই মো. গোলজার আলম কর্তব্যে অবহেলার বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো পুলিশ সদস্য কর্তব্যে অবহেলা করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close