দেশজুড়ে

স্ত্রী-সন্তানের স্বীকৃতি দিয়ে ১৮ বছর পর কারামুক্ত ইসলাম

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ১৮ বছর পর স্ত্রী-সন্তানের স্বীকৃতি দেয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সেই মো. ইসলাম (৪৯) মুক্তি পেয়েছেন।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। মো. ইসলাম ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের আজিজ মৃধার ছেলে।

তার স্ত্রী মালার বাড়িও একই গ্রামে। প্রেম করে বিয়ে, তারপর স্ত্রীর গর্ভে সন্তান। কিন্তু পরে সেই স্ত্রী ও সন্তানকে অস্বীকার করেন ইসলাম। এরপর ডিএনএ টেস্টের সন্তানের পরিচয় নিশ্চিত হয়। এরপরও ইসলাম স্ত্রীর মর্যাদা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মামলা করেন বাবা। সেই মামলায় ২০০৫ সালের ১০ জানুয়ারি ঝিনাইদহের বিজ্ঞ অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালত তাকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) সাজা দেন।

২০১৫ সালের ১৭ মে তাকে ঝিনাইদহ থেকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। ভালো কাজের জন্য অর্জিত রেয়াতসহ ১৯ বছর ১৭ দিন কারাভোগ করেছেন তিনি। এর মধ্যে মূল সাজা খেটেছেন ১৪ বছর ৬ মাস ২৯ দিন। তার অবশিষ্ট সাজা ১০ বছর ১১ মাস ১৪ দিন। তার আগেই তিনি মুক্তি পেলেন।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবু তালেব বলেন, আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সুপার, দুই পক্ষের আত্মীয় স্বজন ও তাদের ছেলে মিলনের উপস্থিতিতে ইসলাম ও মালার বিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের ১ আগস্ট বিয়ের কাবিন উচ্চ আদালতে জমা দেন। এরপর আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছেন। আদালতের কপি পাওয়ার পর আজ মুক্তি দেওয়া হলো।

তিনি আরও বলেন, মহামান্য আদালতের নির্দেশে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মো. ইসলামকে মুক্তি দেয়া হলো। এটি বন্দি সংশোধনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

শুক্রবার কারাগারে মো. ইসলামকে গ্রহণ করতে আসেন বাবা আবদুল আজিজ মৃধা, বোন মমতাজ বেগমসহ পরিবারের চার সদস্য। তবে স্ত্রী মালা ও ছেলে মিলন উপস্থিত ছিলেন না।

মুক্তির পর মো. ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন বন্দি ছিলাম। মুক্তি পেয়ে খুবই খুশি। স্ত্রী, সন্তান পরিবারের সঙ্গে বাকি দিনগুলো কাটাতে চাই।

ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু নওশাদ বলেন, জেল কোড অনুযায়ী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতিক্রমে সিনিয়র জেল সুপারের কক্ষে বিবাহ সংশ্লিষ্ট সকলের উপস্থিতিতে মো. ইসলাম ও মালার বিবাহ সম্পন্ন হয়। এর প্রেক্ষিতে তিনি আজ মুক্তি পেলেন। কারা পরিবারের সবাই খুশি। এটি একটি পজেটিভ (ইতিবাচক) দৃষ্টান্ত হলো। সবাই তাদেরকে সহযোগিতা করবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close