তথ্যপ্রযুক্তি

২২ হাজার পর্নো সাইট বন্ধ

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: ইন্টারনেট একদিকে যেমন সুফল বয়ে আনে অপরদিকে বিপর্যয়ও ডেকে আনে। নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

এরই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে ২২ হাজার পর্নো সাইট এবং দুই হাজার জুয়ার সাইট বন্ধ করা হয়েছে। গুজবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল অপরাধ প্রতিহত করা হয়েছে।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকায় বিআইসিসিতে টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের সাইবার থ্রেট ডিটেকশন ও রেসপন্স প্রকল্প আয়োজিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ ডিজিটার সুরক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধে সাইবার থ্রেট ডিটেকশন ও রেসপন্স প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের আইন প্রয়োগকারি সংস্থা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বিগত দিনে সীমিত সামর্থ দিয়েও যে কাজ করেছে উন্নত বিশ্বেও তা পারেনি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সচেষ্ট না হলে কী পরিমাণ সাইবার নৈরাজ্য হতো তা কল্পনাও করা যায় না।

২০১৮ সালে প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটি সময়োপযোগী আইন উল্লেখ করে বলেন, সিঙ্গাপুরসহ ইউরোপের কিছু দেশ ডিজিটাল অপরাধ প্রতিহত করতে অনেক শক্ত আইন প্রণয়ন করেছে। আমরা ডিজিটাল হব, নিরাপদও থাকব।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ইন্টারনেট হচ্ছে জ্ঞান ভান্ডার, তোমরা সারাদিন ইন্টারনেট ব্যবহার করবে তাতে আপত্তি নেই, তবে ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে সতর্ক থাকতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা মেইল একাউন্ট দুই স্তরের ভেরিফিকেশন্স ব্যবহার করতে হবে। এটি নিশ্চিত করতে পারলে কেউ একাউন্ট হ্যাক করতে পারবে না। ডিজিটাল দুনিয়া অনেক ঝুকিপূর্ণ। স্পাম কখনো খুলবে না।

মন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি দিয়ে সংগঠিত অপরাধ প্রযুক্তি দিয়েই মোকাবেলা করতে হবে, প্রযুক্তি বন্ধ করে দিয়ে নয়। আগামী দিনের প্রযুক্তির অভাবনীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন প্রজন্মকে উপযোগী করে গড়ে তুলতে হলে ইন্টারনেট থেকে তাদের সরানো যাবে না বরং তাদের জন্য ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে হবে, বন্ধ নয়।

বাংলাদেশে ইন্টারনেট প্রসারের তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেটের প্রসার ঘটেছে গত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। ২০০৮ সালে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা ছিল মাত্র ৮ লাখ। গত দশ বছরে তা সাড়ে নয় কোটি অতিক্রম করেছে।

তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার বা সন্তানের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটা খুব প্রয়োজন ছিল। এটা এখন প্রমাণিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার বড় উদ্বেগের কারণ। তবে সরকারের সফল প্রচেষ্টায় ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ আমাদের সংস্কৃতি ও কৃষ্টি এবং প্রচলিত আইন মেনে কন্টেন্ট প্রকাশে সম্মত হয়েছে। ভবিষ্যতে ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনুরূপ ভূমিকা রাখতে সরকারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব নূর-উর-রহমান, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহসিনুল আলম এবং প্রকল্প পরিচালক ও বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল মতিন বক্তৃতা করেন।

/এনএ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close