আশুলিয়াস্থানীয় সংবাদ
আশুলিয়ায় করোনা সন্দেহে ঘরছাড়া ! খোলা বেঞ্চে মানবেতের জীবন
সুচিত্রা রায়, আশুলিয়া: কাঁপছে শরীর। খাবারের অভাব, তার উপর অসুস্থতা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজের নিচে খোলা বেঞ্চে বসবাস করছে মধ্য বয়সের রিকসা চালক একজন মানুষ। থাকা বলতে সড়কের পাশে খোলা জায়গায় পরিত্যক্ত একটি সরু বেঞ্চ। ঠিক মত বসায় দ্বায়, সেখানেই ঘুম! গত এক মাস ধরে এমন মাতবেতর জীবনের সঙ্গে লড়াই করছে মানুষটি। এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণে কর্মহীন, তারমধ্যে শরীরের অসুস্থতা। এমন পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এমন সন্দেহে ঘর ছাড়তে বাধ্য করেন বাড়িওয়ালা। চেয়েও আর কোন ঘরেই জায়গা মিললো না টিপুর। তবে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়র বিশমাইল ফুটওভার ব্রিজের নিচে পরিত্যক্ত দোকানের বেঞ্চে আশ্রয় নেয় দরিদ্র রিকসাচালক।
ধূলা-বালি আর মশার কামড়ে দিনদিন আরো খারাপের দিকে যেতে থাকে টিপুর শারীরিক অবস্থা । বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকের নজরে আসলে কিছু টাকা দিয়ে চিকিৎসার জন্য সরকারী হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। টিপু চিকিৎসার জন্য সাভার এবং ধামরাই সরকারী হাসপাতালে গেলেও চিকিৎসা তো দূরের কথা ডাক্তারদের দেখা মেলেনি। নিরুপায় টিপু ফের বিশমাইল ওভার ব্রিজের নিচে এসে মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাতে থাকে। এখন আর মানুষের দেয়া খাদ্যও খেতে পারছেনা, বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন টিপু।
অসহায় টিপুকে সাহায্যর জন্য তেমন কেউ এগিয়ে না আসলেও সোহেল রানা নিজেই বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার ব্যবস্থা করেন।
সোহেল রানা জানান, টিপু জাহাঙ্গীরনগর এলাকায় অটো রিকসাচালক। হঠাৎ তাকে বিশমাইল ওভার ব্রিজের নিচে পড়ে থাকতে দেখে তাঁর কাছে যাই। কথা শুনে কিছু টাকা দিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেই। ৫-৬ দিন পর যেয়ে দেখি টিপু আগের জায়গায় পড়ে আছে। শরীরের অবস্থা আরও খারাপ। খেতে পারেনা কথাও বলতে পারেনা । জানতে পারলাম সে হাসপাতালে গিয়েছিল কিন্তু ভর্তি হতে পারেনি। গত একমাস ধরে টিপু এখানে পড়ে থাকলেও তাকে সাহায্যও জন্য এগিয়ে আসেনি কোনো মানবতার ফেরিওয়ালা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তৌফিকুল ইসলাম টিপু (৩৬) বোয়ালমারী থানা শহর ফরিদপুর জেলার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে । সে গত দুবছর আগে জাহাঙ্গীরনগর এলাকার গকুলনগর মোজাম্মেল হক মুজার বাড়িতে একা ভাড়া থেকে অটো রিকসা চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করে আসছিলো।